শেরপুরে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজাসহ ১১ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর বড়ভাই।
রোববার রাতে আহত ব্যবসায়ীর বড়ভাই কামাল মিয়া শেরপুর সদর থানায় ওই মামলা দায়ের করার পর এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে শহরের নিউমার্কেট এলাকায় বাদী কামাল মিয়ার ছেলে ইন্টারনেট ব্যবসায়ী কারিমুল হাসান জিহাদ ও তার ব্যবসায়ী পার্টনার তৌফিকুর রহমান তারিফের ওপর অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা।
খবর পেয়ে জিহাদের চাচা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের নিয়ে হামলাকারীদের ফেরাতে চেষ্টা করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চাচা আব্দুল আউয়াল শেখকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
ঘটনার পরদিন রোববার রাত সাড়ে ৮টায় শহরের নবীনগর বাস টার্মিনাল এলাকায় আব্দুল আউয়ালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জিহাদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে গিয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা তার অনুসারীদের নিয়ে প্রথমে গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল প্রতিবাদ করলে রেজা তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। একপর্যায়ে রেজার সঙ্গে থাকা অনুসারীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে আব্দুল আউয়ালকে আহত করে।
এ সময় স্থানীয়রা তাদের ফেরাতে চেষ্টা করলে তাদেরও অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরে ব্যবসায়ী আউয়ালকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক।
সোমবার দুপুরে আব্দুল আউয়ালের অবস্থার আরও অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার সেখান থেকে ঢাকার পপুলার হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে তিনি আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।
আহত ব্যবসায়ীর বড়ভাই কামাল মিয়া বলেন, ঘটনার পর মামলা করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার না করায় আমাদের পরিবার ভয়ে আর আতঙ্কে আছে। আমার ভাইও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। কখন কী হয়ে যায়, বলা যাচ্ছে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনসুর আহমেদ মঙ্গলবার বিকালে বলেন, আহতের বড়ভাই মামলা করেছেন। মামলা গ্রহণের পর থেকেই পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
এ বিষয়ে শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।