বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনায় প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরণের আতঙ্ক কাজ করছে। এমন সহিংসতায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এই ঘটনায় মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের পরীক্ষা অনিবার্য কারণবশত বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ক্লাস করা থেকে বিরত আছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবারের অনাকাঙ্খিত ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অনেকেই এখনও মেডিকেলে ভর্তি আছে। তাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে আজকের চলমান পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র সংগঠনের নের্তৃবৃন্দের সাথে কথা বলে চলমান সমস্যা নিরসনের ব্যবস্থা করব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনবো।
শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, বাকৃবিতে যে ঘটনাটি ঘটেছে পুরোটাই অনাকাঙ্খিত। শহীদ শামসুল হক হল সাধারণ সম্পাদক নিয়ন্ত্রণ করে। তবে তাদের মধ্যে থেকে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বা সামনে এমন পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করবে তাদের শনাক্ত করে আমরা সাংগাঠনিক ব্যবস্থা নিব। তবে মুন্নাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয় নি। সে নিজ ইচ্ছায় হল থেকে বের হয়ে গেছে। হল থেকে বের হয়ে গেলেও হলের কিছু জুনিয়রকে তার নিজের গ্রুপে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এ ঘটনার জন্য কয়েকজন তাকে চড়-থাপ্পর দিয়েছে।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান বলেন, ক্যাম্পাসে যারা এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাদের চিহ্নিত করে সাংগাঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মুইন নাদিম আল মুন্নাকে হল থেকে বের করে দেয় বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ গ্রুপের নেতা-কর্মীরা। পরে মুন্না গতকাল (৩০ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কে.আর মার্কেটে আসলে সভাপতি গ্রুপের প্রায় ২০ জন তার উপর চড়াও হয়। মুন্নাকে কিল ঘুষি ও থাপ্পর মারলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের নেতা-কর্মীরা ঘটনাটি জানতে পারলে পরে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সভাপতি রিয়াদ গ্রুপের সদস্যরা লাঠিসোটা নিয়ে শামসুল হক হলের দিকে যায় তখন বাকৃবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান গ্রুপের অনুসারীরা রিয়াদ গ্রুপের উপর ইট-পাটকেল ও লাঠি দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় ঈশা খাঁ হলের ৮-১০ জন সহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়। গুরুতর আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।