নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেবেশ তালুকদারের ব্যক্তিগত চেম্বারে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ১৫ দিন পর থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার একমাত্র আসামি লিটন সরকারকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তি চেয়ারম্যানের দূর সম্পর্কের ফুপাতো ভাই বলে জানা গেছে।
বুধবার রাতে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার তাকে নেত্রকোনা আদালতে সোপর্দ করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন খালিয়াজুরী থানার ওসি মো. মজিবুর রহমান। ওসি জানান, গতকাল বুধবার বিকাল পৌনে ৫টায় ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে লিটনকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি করেন।
লিটন পার্শ্ববর্তী জেলা সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার বিষ্টপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং চেয়ারম্যানের ফুপাতো ভাই। তিনি খালিয়াজুরীর বল্লভপুর গ্রামে বিয়ে করার সুবাদে শ্বশুরবাড়ি থেকে ধান কাটার কাজ করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধান কাটার সূত্র দরে কিশোরীর সঙ্গে পরিচয় ও মোবাইলে ফোনে কথোপোকথন হয়। বিয়ের প্রস্তাবসহ ঘর সংসার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লিটন গত ৫ মে রাতে চেয়ারম্যান দেবেশের ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে যান কিশোরীকে। সেখানে সারারাত কাটানোর পর লিটন নিজের নাম হৃদয় তালুকদার ও তার বাড়ি আদমপুর বলে পরিচয় দেন। এরপর ভোররাতে ঘুমে রেখেই পালিয়ে যায় লিটন। ওইদিন সকালে হৃদয়কে না পেয়ে কিশোরী বাজারের লোকদের জিজ্ঞেস করে আদমপুরের হৃদয়ের বাড়ি কোনটা। পরে আদমপুর হৃদয় সরকারের বাড়ি গিয়ে বসে থাকেন কিশোরী। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেবেশ তালুকদার সালিশের মাধ্যমে শেষ করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও শেষ হয়নি। পরবর্তীতে ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামের ইউপি সদস্য পল্টু সামন্ত কিশোরীকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। কিন্তু ১৫ দিনেও কোনো বিচার সালিশ না পেয়ে কিশোরীর দিনমজুর বাবা (২৫ মে) খালিয়াজুরী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য পল্টু সামন্ত সাংবাদিকদের জানান, কিশোরীকে চেয়ারম্যানের নির্দেশে আদমপুর থেকে নিয়ে এসেছেন সত্য। তবে রাতের বিষয়টি তিনি সঠিক বলতে পারবেন না।
এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যানকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোনটি কেটে দেন।
তবে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, ‘আমার অফিস আদমপুরে। তবে বাজারের যে রুমটি রয়েছে সেটির নিচতলা বিট পুলিশিং কার্যক্রমের জন্য রাখা। তাতে কে বা কারা মিথ্যা পরিচয় দিয়ে জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। লিটনকে তিনি আত্মীয় হিসেবেও অস্বীকার করেন।
এদিকে অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, সালিশ হলেও তা মীমাংসা হয়নি। এ কারণে বুধবার তাকে আবারও সালিশে ডেকে এনেছিলেন চেয়ারম্যান। পরে সেখান থেকে পুলিশ তাকে নিয়ে যায় এবং পরে মামলা করা হয়। এদিকে সূত্রটি আরও জানায়, চেয়ারম্যানের দূর সম্পর্কের অর্থাৎ গোষ্ঠী সম্পর্কে লিটন ফুপাতো ভাই হন।