জামালপুরে বাবা আব্দুর রশিদকে (৭০) শারীরিক নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে মাদকাসক্ত ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ছেলে রিপনকে (২২) আটক করতে গেলে রিপনকে ছিনিয়ে নিতে স্থানীয় কতিপয় লোক পুলিশের ওপর হামলা করেছে।
হামলায় সদর থানার এএসআই রাজিবসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। শনিবার এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জামালপুর পৌরসভার রশিদপুর এলাকার বৃদ্ধ আব্দুর রশিদের তিন ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে রিপন মাদকাসক্ত। মাদকের টাকার জন্য প্রায় সে তার বাবাকে নির্যাতন করত। গত শুক্রবারও রিপন তার বাবাকে শারীরিক নির্যাতন করে।
এ নিয়ে আব্দুর রশিদ গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর থানায় যান রিপনের বিরুদ্ধে জিডি করতে। এ সময় এলাকার কতিপয় লোক ছেলে-বাবার ঝগড়ার ঘটনাটি শনিবার দিন সালিস করে মীমাংসা করার কথা বলে আব্দুর রশিদকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান।
এদিকে থানায় জিডি করতে যাওয়ায় মাদকাসক্ত রিপন ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার বাবা আব্দুর রশিদকে শারীরিক নির্যাতন করেন। গুরুতর অবস্থায় স্বজনরা তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তারা লাশ বাড়িতে নিয়ে এলাকায় কতিপয় অসাধু লোকজন তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের উদ্যোগ নেয়।
খবর পেয়ে শনিবার বিকালে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন সুমন ও সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. দেলোয়ার হোসেন পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল রশিদপুরে আব্দুর রশিদের বাড়িতে গিয়ে আব্দুর রশিদের লাশ উদ্ধার এবং তার ছেলে রিপনকে আটক করার সময় রিপনকে ছিনিয়ে নিতে কতিপয় লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে।
হামলায় সদর থানার এএসআই রাজিবসহ ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ফয়সাল (২৩) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, আব্দুর রশিদকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে তার ছোট ছেলে আটক রিপনকে আসামি করে রিপনের ভাই জাহাঙ্গীর আলম শিপন বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অপরদিকে পুলিশের গাড়ির বহরে হামলার অভিযোগে আটক ফয়সালসহ অজ্ঞাত আরো কিছু লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।
আজ রোববার সকালে নিহত আব্দুর রশিদের লাশের ময়নাতদন্ত করানো হয়। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এলাকায় গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।