শেরপুরে যৌতুকের দাবি পূরণ না হওয়ায় নির্যাতনে স্ত্রীকে হত্যার মামলায় ফুরকান আলী (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান আসামির অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যু দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত ফুরকান আলী শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের চেল্লাকান্দি এলাকার ময়দান আলীর ছেলে। মামলার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন।
রায়ে একই সঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর তিন আসামি ফুরকানের বাবা ময়দান আলী, মা ফুলেতন বেগম ও আত্মীয় সওদাগর আলীকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু। মামলার নথির বরাত দিয়ে তিনি জানান, শ্রীবরদী উপজেলার বড়গেরামারা এলাকার আব্দুল জব্বারের মেয়ে জহুরা বেগমকে বিয়ে করেছিলেন রানীশিমুল ইউনিয়নের চেল্লাকান্দি এলাকার ফুরকান আলী। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে জহুরা বেগমকে নির্যাতন করে আসছিলেন ফুরকান। এক সন্তানের জননী জহুরাকে ২০১১ সালের ২ জুলাই রাতে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যা করেন ফুরকান। এরপর লাশ ঘরের ধর্নার সঙ্গে ঝুঁলিয়ে রাখেন। এ ঘটনায় পরদিন ফুরকান আলী, তাঁর বাবা-মা ও দুই আত্মীয়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে শ্রীবরদী থানায় মামলা করেন জহুরার বড় ভাই ফজলুল হক।
পরে তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ নভেম্বর ফুরকানের আত্মীয় আজিজুর রহমান ছাড়া বাকি চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন শ্রীবরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আমিন খান। অভিযুক্ত ময়দান আলী হাজির হয়ে বিচারের মুখোমুখি হলেও অপর তিন আসামিই পলাতক থাকেন। ফলে মামলার বিচার নিষ্পত্তিতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘসূত্রতা। মামলায় চূড়ান্ত পর্যায়ে বাদী, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(ক) ধারায় আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ফুরকান আলীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালতের বিচারক।