দুপুর ১২টা ১৫। ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার শহীদ মিনারের সামনে। ট্রাফিক পুলিশের সামনেই লাঠি, বাঁশি ও কথিত টোকেন হাতে বেশ কয়েকজন যুবক উভয় দিক থেকে আসা-যাওয়া বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে টোকেন ধরিয়ে দিয়ে চাঁদা আদায় করছে। এ সময় এক যুবক একটি ইজিবাইক থামিয়ে চাঁদা চাইলে ওই যুবকের চাহিদামতো না হওয়ায় লাঠি দিয়ে ভয় দেখিয়ে একটি পা ইজিবাইকে রেখে উচ্চৈঃস্বরে বলে ওঠে, ‘এইডা কী দিছস, আগেরটার লগে অহন ঈদেরটাও দে, না অইলে সাইড কর।
এভাবেই তর্ক চলে বেশ কয়েক মিনিট। অসহায় চালক অনুনয়-বিনয় করেও টাকা কম দিতে পারেননি। এমন দৃশ্য এখন ওই সড়কের নান্দাইলেও।
যানবাহনের চালকরা জানান, চাঁদার রশিদ ধরিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি থামিয়ে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর করে আটকে রাখাসহ নানা হয়রানি করা হয়। অনেক সময় গাড়ি ভাঙচুর ও চাকার হাওয়া ছেড়ে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিএনজিচালক ও ইজিবাইকচালক বলেন, রশিদের মাধ্যমে প্রতিদিন দুবার করে আমাদের কাছ থেকে একটি সংগঠনের নাম ব্যবহার করে চাঁদা আদায় করা হয়। আমাদের কল্যাণে এ টাকা ব্যয় করার কথা থাকলেও কোথায় যায় এ টাকা আমরা জানি না। যারা রাস্তায় চাঁদাবাজি করছে তারা অনেককেই ম্যানেজ করছে। তাঁরা আরো বলেন, নান্দাইল চৌরাস্তা থেকে ঈশ্বরগঞ্জ আসতেই প্রত্যেক জায়গায় ১০-১২ জন লোক টাকা উত্তোলন করে। চাঁদা উত্তোলনের একটি রশিদে দেখা যায়, বাংলাদেশ অটোরিকশা শ্রমিক লীগ (অটোরিকশা ও অটোটেম্পোচালকদের সমন্বয়ে গঠিত)- এই নাম ব্যবহার করে চাঁদা তোলা হচ্ছে। তা ছাড়া পৌরসভা ও বিভিন্ন কল্যাণের নামে তো আছেই। ওই সব রশিদের কোথাও কারো স্বাক্ষর নেই। যেখানে প্রতি সিএনজি থেকে নেওয়া হতো ২০ টাকা এখন ঈদ উপলক্ষে আরো ১০ টাকা যোগ। এ ছাড়া অন্যান্য যানবাহনে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।
এদিকে নান্দাইল সদরের কয়েক শ গজের মধ্যে তিনটি সংগঠন ও পৌরসভা নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে। ঘটনা সব সময় প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটলেও এতে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।