ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার কাকনী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার গোয়াতলা শশার বাজারে এ সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষের সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
পুলিশ ও উপজেলা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার উপজেলার কাকনী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে কাকনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমানের ভাতিজা শরীফ সরকার সভাপতি হন। এর জের ধরে গতকাল সোমবার রাতে ইউনিয়নের গোয়াতলা শশার বাজারে শরীফ সরকারের পারিবারিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেন প্রতিপক্ষের কর্মীরা। হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আজ দুপুরে শরীফ সরকারের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান। মশিউর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শরীফ সরকার সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় কাকনী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল খালেক তালুকদার সমর্থিত ছাত্রলীগ কর্মীরা এ হামলা চালান।
সংবাদ সম্মেলন চলাকালে মশিউর রহমানের কাছে খবর আসে, খালেক তালুকদারের সমর্থকেরা মশিউর রহমানের এক সমর্থককে শশার বাজারে আটকে রেখেছেন। এ ঘটনায় দুপুরে শশার বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শরীফের বাড়িতে হামলার খবর পেয়ে আজ বিকেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিব হাসান, সাধারণ সম্পাদক শিবু চন্দ্র দাস ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল মান্নান শশার বাজারে যান। এ সময় আবারও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে সড়কের পাশে রাখা কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ সময় শশার বাজার এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, কাকনী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমান ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল খালেক তালুকদারের বিরোধের জেরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শিবু চন্দ্র দাস বলেন, ‘কাকনী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি দেওয়ার আগে শরীফ সরকার ও আল আমিন সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন। আমরা দুই প্রার্থী, স্থানীয় যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই শরীফ সরকারকে সভাপতি করেছি। তখন খালেক তালুকদারের পক্ষের কোনো প্রার্থী ছিলেন না। গত রোববার কমিটি করার পর তাঁরা নতুন সভাপতি নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছেন। গতকাল রাতে শরীফের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন। ওই ঘটনার খোঁজ নিতে গেলে আজ আমাদের ওপরও হামলা চালান কয়েকজন কর্মী। এ সময় অন্তত ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে কাকনী ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল খালেক তালুকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, স্থানীয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের কারণে শশার বাজার এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে সেটি স্বাভাবিক হয়।