মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবারও লাখো মুসল্লির পদভারে মুখর হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। আসছে ঈদুল ফিতরের দিন সকাল ১০টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত দুই বছর শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে দুবার পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় মুসল্লিশূন্য ছিল শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবারের ঈদুল ফিতরের জামাত শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক প্রস্তুতি সভা হয়েছে। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম সভায় সভাপতিত্ব করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, এবার কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকায় শোলাকিয়ায় ১৯৫তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত দীর্ঘদিন ধরে না হওয়ায় মানুষের মনে আক্ষেপ ছিল। এবার আর সেই আক্ষেপ থাকবে না। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুসল্লিদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে। মাঠ ও শহরকে দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কামরুল আহসান, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, র্যাব-১৪, সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. শাহরিয়ার মাহমুদ খান, সিনিয়র জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. শামছুল হক, শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, নিরাপত্তাব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আয়োজন করা হবে ঈদের জামাত। বিজিবি, বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। পুরো মাঠ ও আশপাশ সিসিটিভি ক্যামেরার আওতার মধ্যে থাকবে। মুঠোফোন নিয়ে কেউ মাঠে আসতে পারবেন না। তবে জায়নামাজ নিয়ে আসা যাবে।
১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম ‘সোয়া লাখিয়া’। যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত। ২০১৬ সালে ঈদুল ফিতরের দিন মাঠের কাছে জঙ্গি হামলা ঘটনার পর ওই বছর ঈদুল আজহায় কঠোর নিরাপত্তায় মধ্যে স্বল্প পরিসরে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর পর থেকে আবারও ঈদগাহ ময়দানের পরিবেশ স্বাভাবিক হয় এবং লক্ষাধিক মুসল্লির সমাগম ঘটে। তবে করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর (২০২০ ও ২০২১ সালে) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।