জামালপুরের প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) অস্থায়ী অফিস সহায়কের বিরুদ্ধে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা জানার পর অভিযুক্তকে আত্মগোপনে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে পিটিআইয়ের সুপারিনটেনডেন্টের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পিটিআইয়ের সামনে অবস্থান নেন।
আজ শনিবার দুপুর ১২টায় ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার স্থানীয় লোকজনকে বললে এলাকার লোকজন পুলিশকে খবর দেন। পরে সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আসামির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম শহিদুর রহমান (২৬)। তিনি পিটিআইয়ের অস্থায়ী অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর বাড়ি বকশীগঞ্জ উপজেলার ভাটিপাড়া এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে পিটিআই মাঠে স্কুলছাত্রী খেলা করার সময় কৌশলে ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে যান শহিদুর। পরে পিটিআইয়ের একটি ফাঁকা কক্ষে ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ছাত্রীর চিৎকার শুনে তাঁর বাবা দৌড়ে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি পরে ছাত্রীর পরিবার পিটিআইয়ের কর্তৃপক্ষকে জানান। কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিয়ে ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য ছাত্রীর বাবা-মাকে নিষেধ করেন।
ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে, ছাত্রীর পরিবার খুবই দরিদ্র। ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা পিটিআইতে বাবুর্চির চাকরি করেন। কর্তৃপক্ষ কোনো বিচার না করায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় আজ শনিবার দুপুরে পুলিশকে খবর দেন।
ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করে জানান, খুব কষ্ট করে মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। বাবুর্চির কাজ করে সংসার চালান। তাঁর মেয়ের সঙ্গে যা ঘটেছে। সেটার কারণে মেয়েটি একদম চুপচাপ হয়ে গেছে। শহিদুর পিটিআইয়ে চাকরি করেন। ফলে পিটিআইয়ের সুপারিনটেনডেন্ট ফরিদ আহমেদকে তিনি সব জানান। তিনি তখন তাঁকে বিষয়টি কাউকে না জানাতে নিষেধ করেন এবং উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার গরিব মানুষ। কই যাব, কার কাছে যাব বিচারের জন্যে! কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। পরে যখন দেখলেন, ওই সুপারিনটেনডেন্ট নিজের গাড়িতে তুলে ওই শহিদুরকে নিয়ে যাচ্ছেন। তখন বুঝতে পারছি, তিনি বিচার করে দিবেন না, মিথ্যা আশ্বাস দিছেন। পরে এক প্রতিবেশীর সহযোগিতায় পুলিশকে জানিয়েছি।’ এ ঘটনার তিনি ওই যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
পিটিআইয়ের সুপারিনটেনডেন্ট ফরিদ আহমেদ তার বিরুদ্ধে ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারি ছুটি থাকায় অন্যান্য শিক্ষকেরা বাইরে রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছি।
জামালপুর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ সিকদার বলেন, ঘটনাস্থলে রয়েছি। ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে ছাত্রীর পরিবার মৌখিকভাবে পুরো ঘটনা বলেছেন। তাঁরা লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঘটনার পর থেকে ওই যুবক পলাতক রয়েছে। তাঁকেও আটকের চেষ্টা চলছে।