একদিকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, অন্যদিকে ভর্তুকি সামাল দিতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার। সোমবার পাইকারি পর্যায়ে গ্যাসের দাম ১১০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে পেট্রোবাংলা।
সকালে রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিইআরসির উদ্যোগে গ্যাসের মূল্য নির্ধারণে গণশুনানি শুরু হয়। শুনানিতে গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট গ্যাসের গড় বিক্রয় মূল্য ৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা ৩৫ পয়সা করার প্রস্তাব দেয় পেট্রোবাংলা।
এছাড়া মিশ্রিত গ্যাসের ক্রয় মূল্য ধরা হয়েছে ১৫ টাকা ৩০ পয়সা। পেট্রোবাংলা বলছে, দেশে গ্যাস উৎপাদনে ব্যয় বৃদ্ধি ও আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় পরিচালন ব্যয় বেড়েছে। যদিও বিইআরসির কারিগরি কমিটি বলছে, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিটের দাম ২৮ শতাংশ বাড়িয়ে তা হওয়া উচিত ১২ টাকা ৪৭ পয়সা। বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের পাইকারি মূল্য ৯ টাকা ৭০ পয়সা।
দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের প্রস্তাবে বলেছে, এলএনজি আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চলতি অর্থবছরে দেশী-বিদেশী গ্যাস কেনা ও সরবরাহ, পরিচালন ব্যয়, ভ্যাট-ট্যাক্স এবং নানা চার্জ মিলিয়ে ৬৫ হাজার ২২৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে বছরে ৮৭৮ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানিতে ৪৪ হাজার ২২৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
অর্থাৎ প্রতি ঘনমিটার এলএনজিতে ব্যয় ৫০ টাকা ৩৮ পয়সা, যার মধ্যে ক্রয়মূল্য ৩৬ টাকা ৬৯ পয়সা, আমদানি পর্যায়ে মূসক ৫ টাকা ৫০ পয়সা, অগ্রিম আয়কর ৭৪ পয়সা, ফাইন্যান্সিং ব্যয় ১ টাকা ৪৪ পয়সা, ব্যাংক চার্জ ও কমিশন ৫৯ পয়সা, রিগ্যাসিফিকেশন ব্যয় ১ টাকা ৮৬ পয়সা, অপারেশনাল ব্যয় ৫ পয়সা এবং ভোক্তা পর্যায়ে উৎসে কর ৩ টাকা ৫২ পয়সা (৭%)।
দেশে কার্যরত বিদেশী গ্যাস কোম্পানির (আইওসি) গ্যাস কিনতে ব্যয় হবে প্রতি ঘনমিটারে ২ টাকা ৯১ পয়সা। বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড কোম্পানি (বিজিএফসিএল), সিলেট গ্যাসফিল্ড কোম্পানি (এসজিএফএল) এবং বাপেক্সের পরিচলন ব্যয় ধরা হয়েছে প্রতি ঘনমিটারে যথাক্রমে ৮৭.৯৮ পয়সা, ৩৩.৮৩ পয়সা এবং চার টাকা ৫৫ পয়সা।
এ ছাড়া প্রতি ঘনমিটারে পরিচালন মার্জিন সঞ্চালন কোম্পানির (জিটিসিএল) ৮৬.৪৮ পয়সা, বিতরণ কোম্পানির ২৭.৪৯ পয়সা ধরা হয়েছে। প্রতি ঘনমিটারে পেট্রোবাংলার পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় পয়সা, গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে ৪৬.১৪ পয়সা এবং জ্বালানি উন্নয়ন তহবিলে ৮৮.৭০ পয়সা চার্জ ধরা হয়েছে। সরকারের হিস্যা হিসাবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরা হয়েছে।