1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১১ অপরাহ্ন

জামিনের পর ৬ দিনেও ছাড়া পাচ্ছে না নিকলীর কিশোর

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ১২ মার্চ, ২০২২

আদালত থেকে জামিন লাভের পর ছয় দিন হয়ে গেলেও অজানা কারণে ছাড়া পাচ্ছে না নিকলীর জারইতলা ইউনিয়নের ধারীশ্বর গ্রামের মাদরাসাছাত্র (১৭)। ওই কিশোর সমাজসেবা অধিদপ্তদরের গাজীপুরের টঙ্গীর ‘শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে’ অন্তরীণ আছে। জামিন পেয়েও ছাড়া না পাওয়ায় তাকে ছাড়াতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে পরিবার। সে এবার দাখিল পরীক্ষা দেয়।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে মিঠুকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। আদালত সূত্র জানায়, সে কিশোরবয়সী হওয়ায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জের বিচারিক হাকিম আদালত থেকে ১ নম্বর শিশু আদালতে মামলাটি স্থানান্তরিত হয়। ওই দিনই মিঠুকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত ‘শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র-বালকে’ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে কিশোরগঞ্জ শিশু আদালতের বিজ্ঞ বিচারক কিরণ শংকর হালদার গত সোমবার (৭ মার্চ) মিঠুর জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট কুলেশ চন্দ্র নাগ কাজল জানান, ৭ মার্চে জামিনের কাগজপত্র টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। কিশোরগঞ্জ শিশু আদালতের মামলার নম্বর ৩৮/২২। জামিনের স্মারক নম্বর : ৫৩। আজ শনিবার (১১ মার্চ) পর্যন্ত ওই কিশোর কারা হেফাজত থেকে ছেলেটি বেরোতে পারেনি। এর কী কারণ থাকতে পারে জানা নেই।

শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক এম ইয়াহিয়াতুজ্জামান জামিনের কাগজ তার কেন্দ্রে পৌঁছেছে কি না তা জানতে চেয়ে বলেন, এ ধরনের জামিনের কাগজ কারাগারের মাধ্যমেই আসে। সে কারণে দেরি হতে পারে। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। এর পেছনে আর কোনো কারণ নেই।

কিশোরের মা নিকলীর গৃহবধূ দুর্দশার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমি পথঘাট চিনি না। জানি না আমার পুতেরে হেরা কেরে ছাড়তাছে না। কিয়ের লাইগ্যা জামিন পাইয়াও পাঁচ দিন ধইরা আমার পুত জেলে পস্তাছে! আফনেরা আমার পুতেরে আইন্যা দেইন। অহন ঘরে বইয়া কান্দন ছাড়া আমার গতি নাই। ‘

কিশোরের বাবা কর্মসূত্রে সৌদি আরবে আছেন। তাকে ছাড়িয়ে আনতে ছোটাছুটি করছেন এক স্বজন। তিনি জানান, জামিনের কাগজ পাঠিয়ে দেওয়া হলেও শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র বলছে, কাগজ নাকি পায়নি। তিনি মনে করেন, ডাকযোগে গেলেও জামিনের কাগজ পৌঁছাতে পাঁচ দিন লাগার কথা নয়। এখানে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকতে পারে।

মামলার এজাহারে জানা যায়, খড়ের গাদা তুলতে গিয়ে ওই কিশোর তাদের সীমানায় থাকা অন্য একজনের আমগাছের ডালপালা ছাঁটে। এ নিয়ে গত বছরের ২০ এপ্রিল মামলার বাদী ও কিশোরের পরিবারের নারীরা ঝগড়ায় জড়ান।

এজাহারে বলা হয়, বাদীর আট বছরের প্রতিবন্ধী শিশুকন্যাকে ‘হত্যার উদ্দেশ্যে’ ওই কিশোর লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর ১ জুন আহতকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। হাসপাতালের ছাড়পত্রে দেখা যায়, মেয়েটির বাম কণ্ঠহাড় ভাঙা রয়েছে।

জারইতলা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. ইছহাক রানা জানান, ঝগড়ার পরই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আপসের চেষ্টা চালান। সে সময় মেয়েটি কোনো আঘাত পেয়েছে বলে দাবি করা হয়নি। তার জানামতে ঝগড়ার সময় মেয়েটি পাশের বাড়িতে দাদির কাছে থাকায় তার ওপর কোনো আঘাত পড়েনি। অন্য কোনো দুর্ঘটনায় হয়তো তার কণ্ঠহাড় ভেঙে যেতে পারে।

ঘটনার দেড় মাস পর প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে মামলার বাদী জানান, সে প্রতিবন্ধী বলেই আঘাতের কথা প্রথমে জানায়নি। পরে সে ব্যথায় কোঁকালে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। তিনি এ ক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নেননি বলে দাবি করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি