জমির মালিকানা নিয়ে চাচাতো দেবরদের সঙ্গে স্বামীর বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় জমি দখলে নিতে গেলে স্বামী বাধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। এ সময় স্বামীকে বাঁচাতে গেলে আটমাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তিনিও মারধরের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন। ব্যাপক রক্তক্ষরণে অবস্থা বেগতিক হলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন।
মৃত নবজাতকের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মায়ের শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।
খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় আনোয়ারা বেগম অচেতন হয়ে শুয়ে আছেন। পাশে ওই গৃহবধূর চাচি নায়রা বেগম মৃত সন্তানের মরদেহ কোলে বসে আছেন। আরেক পাশে আনোয়ারার স্বামী মো. শহীদ মিয়া অসহায়ের মতো কাঁদছেন।
শহীদ মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বাড়ি নান্দাইল উপজেলার বীর বেতাগৈর ইউনিয়নের আতারামপুর গ্রামে।
শহীদ বলেন, জমিজমার মালিকানা নিয়ে চাচাতো ভাই পাশের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের রোকন মিয়ার (৫০) সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে তিনি ঈশ্বরগঞ্জে অবস্থিত নান্দাইল জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেছেন। কিন্তু তাঁর চাচাতো ভাই রোকন মিয়াসহ অন্যরা আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করেই জোরপূর্বক পুরো জমি দখল করতে চান।
শহীদ মিয়া বলেন, ‘গত বুধবার রোকন মিয়া দলবল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করে প্রথমে তাঁর ওপর হামলা করে। এ সময় তাঁর ভাই রফিক উদ্দিনের ছেলে মো. শাহীন মিয়া (২২) হামলকারীদের বাধা দেয়। রোকনের লোকজন শাহীনকে ধরে বেদম মারধর শুরু করে। এ দৃশ্য দেখে স্বামী ও দেবরের সন্তানকে বাঁচাতে ছুটে যান অন্তঃসত্ত্বা আনোয়ারা বেগম। হামলাকারীরা গৃহবধূকে মারধর করে আহত করে। ‘
এ ঘটনায় শহীদ মিয়ার ভাই রফিক মিয়া বাদী হয়ে রোকন মিয়াসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার নান্দাইল মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরণে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ আনোয়ারা বেগমকে মারধর করে আহত করার ঘটনা উল্লেখ রয়েছে।
নান্দাইল থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, অভিযুক্তরা গাঢাকা দিয়েছে। এখন মামলাটিতে নতুন ধারা সংযুক্ত হবে।