মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত শেরপুরের নালিতাবাড়ীর বিধবাপল্লীতে নির্মিত হলো ‘সৌরজায়া স্মৃতিসৌধ’। ১৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামের বিধবাপল্লীতে স্মৃতিসৌধের ফলক উন্মোচন করেন জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ।
এ সময় তিনি বলেন, বিধবাপল্লীর উন্নয়নে ধাপে ধাপে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হলো।
তিনি জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সেখানকার শহীদ পরিবারের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আগামী এক বছর সদস্যদের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহের ঘোষণা দেন। এ দিন তিনি প্রত্যেক বীর জায়ার মাঝে ১০ কেজি করে চাল, এক কেজি মসুর ডাল, এক কেজি লবণ, এক কেজি চিনি, দুই কেজি চিড়া, এক লিটার ভোজ্য তেল ও নুডলস তুলে দেন।
উদ্বোধনকালে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তোফায়েল আহমদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফরিদা ইয়াছমিন, জেলা লেডিস ক্লাবের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস প্রিয়া, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন বছরের প্রচেষ্টায় তিন শতক জমির ওপর নির্মিত হয়েছে সৌরজায়া স্মৃতিসৌধটি। যার সামনের রাস্তার জন্য স্থানীয় দুই ব্যক্তি এক শতক জায়গা দিয়েছেন। স্মৃতিসৌধে স্থান পেয়েছে ৮৮ জন শহীদের নাম। এ ছাড়া পাশের ফলকে লেখা হয়েছে বিধবাপল্লীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হওয়ায় বিধবাপল্লীর বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী সোহাগপুর গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসরদের সহায়তায় ছয় ঘণ্টার তাণ্ডব চালায়। এ সময় গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ১৮৭ জন পুরুষকে হত্যা করে। ওই সময় ৬২ নারী বিধবা হন এবং তাদের মধ্যে ১৪ জন নির্যাতনের শিকার হন। এর পর থেকেই সোহাগপুর গ্রামটি বিধবাপল্লী নামে পরিচিতি লাভ করে।