নেত্রকোনায় কলেজছাত্রকে অপহরণের ১২ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী এ তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ১০টার দিকে কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
অপহৃত ওই ছাত্রের নাম মো. কবির হোসেন (২০)। তিনি জেলা শহরের পারলা এলাকার মো. রুস্তম আলীর ছেলে। নেত্রকোনা সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি।
পুলিশ সুপার জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে কবির হোসেন একটি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে চড়ে কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী পাঁচগাঁও এলাকায় স্বাধীন ইসলাম নামের এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। কলমাকান্দার সীমান্তবর্তী পাঁচগাঁও এলাকায় পৌঁছার পর তিন-চারজন যুবক তার পথরোধ করেন। পরে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে তাকে অপহরণ করে প্রথমে একটি পাহাড়ে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সেখানে একটি নির্জন বাড়িতে নিয়ে তাকে জিম্মি করে রাখা হয়। এ সময় অপহরণকারীরা তার সঙ্গে থাকা ১০ হাজার টাকা ও মুঠোফোনটি কেড়ে নেয়। পরে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবাকে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণকারীদের ফোন পাওয়ার পর কবির হোসেনের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানান।
পরে পুলিশ সুপার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফরিদ আহমেদের নেতৃত্বে একটি দলকে কলমাকান্দায় পাঠান। ওই দলের সদস্যরা অপহরণকারীদের কাছ থেকে দু’টি নম্বর সংগ্রহ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে দুই হাজার টাকা পাঠান। পরে বাকি টাকা সরাসরি দেওয়ার কথা বলে এক ধরনের ফাঁদ পাতেন। এরপর মোবাইল ট্র্যাকিং করে অপহরণ চক্রের অবস্থান শনাক্ত করে ডিবির সদস্যরা ওই দিন রাত সোয়া ১০টার দিকে বরুয়াকোনা এলাকার কাছাকাছি ভারত সীমান্ত সংলগ্ন গোনাপাড়া গ্রামে অভিযান পরিচালন করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা কবির হোসেনকে রেখে পালিয়ে যায়। পরে ডিবির সদস্যরা কবির হোসেনকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়।
অপহৃত কবির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অপহরণ চক্রে অন্তত ১০ জন সদস্য ছিল। তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করেছে। একটা কেক ছাড়া আর কিছু খেতে দেয়নি।
পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে এরা একটি পেশাদার অপরাধী চক্র। আমরা তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। দ্রুত তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।’