নির্বাচনে হেরে গিয়ে প্রতিশোধে নামেন এক চেয়ারম্যান ও তিন মেম্বার প্রার্থী। নিজেদের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাঁরা দুই দফায় শতাধিক বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া ছাড়াও একটি গরুকে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনার পর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে নেমে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ‘নাটের গুরু’ পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম ও তাঁর অনুসারী তিন মেম্বার প্রার্থীসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
ঘটনাটি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নে মরিচার মাইজপাড়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নে গত সোমবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মরিচারচর মাইজপাড়া ২ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বার নির্বাচিত হন আবুল বাশার বাদশা। তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ফাখরুল ইসলাম, মফিজ উদ্দিন ও লিটন মিয়া। বাড়ির পাশেই কেন্দ্র থেকে রাতে আবুল বাশার বাদশাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে ক্ষিপ্ত হন পরাজিত তিন প্রার্থী। তাঁরা এ ফলাফল কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। আর তাঁদের ইন্ধন যোগান পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম। এ অবস্থায় ওই ওয়ার্ডের নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করে আচমকা বিজয়ী মেম্বারের বাড়িতে গিয়ে হামলা ও লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে শতাধিক সমর্থকের বাড়িতেও হামলা ও লুটপাট চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করে। গভীর রাত পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটলে বাড়িঘর ছাড়ে অনেকেই।
ঘটনার পরদিন গত মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওই তিন পরাজিত প্রার্থী একত্রিত হয়ে নিজ এলাকায় ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ফের হামলা চালায় বিজয়ী প্রার্থী বাদশা ও তাঁর সমর্থকদের বাড়িঘরে। ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পাশপাশি গত বুধবার কালের কণ্ঠে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
বিজয়ী মেম্বার আবুল বাশার বাদশা জানান, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল তাঁকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু জনগণের রায়ে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নজরুলের নির্দেশে প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজন মেম্বার প্রার্থী দলবল নিয়ে তাঁর ও সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও শেষে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি সফিকুল ইসলাম জানান, এ ধরনের বর্বরোচিত ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটানোর মদদে নেপথ্যে থাকা পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম ও হামলায় সরাসরি জড়িত তিন পরাজিত মেম্বার প্রার্থীসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।