কেন্দ্রের গেটের সামনে রামদা হাতে যুবক ও তার দলবল। পাশেই অস্ত্রের মহড়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও সড়কে আগুন। একধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি করে কেন্দ্র দখলে নিয়ে নৌকার সমর্থকরা যে যার মতো সিল মারছে। আজ সোমবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এ ধরনের দৃশ্য দেখা যায় ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বড়হিত উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে।
এক যুবকের চিৎকার―’গেটের সামনে আমরা আছি, তরা যত পারস নৌকায় ভোট মার। কেউ আওনের আগে আমরারে কইয়া আওন লাগব। ‘
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় মোট ১১টি ইউনিয়নে ১২৩টি কেন্দ্রে ভোট হয়। এতে ৮১ জন চেয়ারম্যান ও ৪২৩ জন সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ভোট শুরু থেকেই বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে থেমে থেমে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ছাড়া সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ নিহত না হলেও আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। সকালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে সোহাগি ইউনিয়নের ভালুকবেড় মাদরাসা কেন্দ্রে। সেখানে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে নারীসহ আহত হয় কমপক্ষে ২০ জন। জাল ভোটের ঘটনা নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিকে দুপুরের পর কেন্দ্র দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করছিল বড়হিত ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী শাহ জালালের সমর্থকরা। প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে তা সম্ভব না হলেও একপর্যায়ে সেখানে বড়হিত উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে স্থানীয় একটি বাজারে লাঠিসোঁটা, কাঠের বৈঠা ছাড়াও রামদা-বল্লম নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের আচমকা ধাওয়া করে। ওই সময় কেন্দ্রের সামনের সড়কে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো ছাড়াও সড়কে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে সাধারণ ভোটাররা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে চলে যায়। এই সুযোগে সশস্ত্র অবস্থায় একদল যুবক রামদা হাতে নিয়ে কেন্দ্রের গেটে দাঁড়িয়ে থেকে ভেতরে থাকা নৌকার সমর্থকদের নির্বেঘ্নে ভোট দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিতে থাকে। এভাবে চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা। ৪টার সময় ভোট নেওয়া শেষ হলে গণনা শুরু হয়।
এদিকে আরেক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে মাইজবাগ ইউনিয়নের ভাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। সেখানে মেম্বার প্রার্থী হোসাইন আহম্মদ হোসেন ও ওমর ফারুকের সমর্থকদের মাঝে কেন্দ্রের ভেতরে জাল ভোটের প্রচার নিয়ে সংঘর্ষ বাধে বিকেল সাড়ে ৩টায়। প্রায় আধাঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। পরে স্ট্রাইকিং ফোর্স এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলেও উত্তেজনা বিরাজ করছিল।