নেত্রকোনার মদনে রাস্তা কেটে খাল খনন করার অভিযোগ উঠেছে জব্বার এন্টারপ্রাইজ নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। পৌরসভার ইমদাদপুর ও থানা রোডের (৩ নম্বর ৪ নম্বর ওয়ার্ড) সংযোগ সড়ক কেটে খাল খনন করায় এলাকাবাসী খননকাজ বন্ধ রেখেছে। প্রকল্পের কাজ অর্ধেকের বেশি সম্পন্ন হলেও প্রকল্প এলাকায় কাজের বিবরণী সংবলিত কোনো সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। খননকাজে এমন নয়ছয় করায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, পৌরসভার ইমদাদপুর মৌজার মগড়া নদী থেকে চেলাই নদী পর্যন্ত ১.৭ কিলোমিটার একটি খাল রয়েছে। দীর্ঘদিন আগে খালটি ভরাট হয়ে যায়। ২০০০ সালের মদন পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে ২০০২ সালে ওই খালের ওপর দিয়ে ফচিকা থেকে থানা রোড পর্যন্ত একটি সংযোগ সড়ক হয়। ওই সড়ক দিয়ে ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের লোকজন যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু এ বছর বিএডিসির আওতায় মগড়া নদী থেকে চেলাই নদী পর্যন্ত ১.৭ কিলোমিটার খাল খননের জন্য ১৪ লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ হয়। কাজটি বাস্তবায়ন করছেন জব্বার এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
রবিবার খাল খননের প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, পৌরসভার রাস্তা কেটে খাল খননের কাজ দুই-তৃতীয়াংশ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকল্প বিবরণীর তথ্যের কোনো সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। রাস্তা কাটা ও খননকাজে নয়ছয়ের অভিযোগে খননে ব্যবহৃত এক্সকাভেটর বন্ধ রেখেছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্প এলাকায় কোনো রকম তথ্যের সাইনবোর্ড না দিয়ে হঠাৎ খাল খনন শুরু করা হয়। রাস্তা কেটে খাল খনন শুরু করায় লোকজনের যাতায়াতের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। খননের মাটি দিয়ে রোপণকৃত ফসলি জমি নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। জমি নষ্ট না করে খননের মাটি দূরে রাখার নিয়ম থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক ফসলি জমিতে মাটি রাখছে।
কৃষক সাইফুল ইসলাম, শাহজাহান, চন্দন পাল, রফিকুলসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ‘পৌরসভার রাস্তাটি কারো কাছে কিছু না বলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কেটে ফেলেছে। ঠিকাদার জোরপূর্বক খননের মাটি ফেলে আমাদের রোপণ করা বোরো জমি নষ্ট করে দিচ্ছে। আমরা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন আমাদের ফসলি জমি নষ্ট না করে খনন কাজ করেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জব্বার এন্টারপ্রাইজের প্রকল্প প্রতিনিধি মো. সজিব মিয়া বলেন, ‘আমি কাজ বাস্তবায়ন করছি; কিন্তু আমার কাছে প্রকল্পের কোনো তথ্য নেই। বিএডিসি থেকে প্রকল্প বিবরণী সাইনবোর্ড দেওয়ার কথা রয়েছে। সাইনবোর্ড পেলে টাঙানো হবে। ‘
মদন পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুকুল ইসলাম বলেন, ইমদাদপুর থেকে থানা রোডের সড়কের একাংশ পৌরসভার অনুমতি না নিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কেটে ফেলেছে। খননের মাটি দিয়ে রোপণকৃত ফসলি জমি নষ্ট করা হচ্ছে।
রাস্তা কেটে খাল খননের ব্যাপারে মদন পৌরসভার মেয়র মো. সাইফুল ইসলাম জানান, পৌরসভার রাস্তা একাংশ কাটার অভিযোগে প্রকল্প পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাস্তা ঠিক করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।