জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সিরিয়াল ভেঙে টিকা দিতে না দেওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা ও ভাঙচুরের করেছে টিকা নিতে আসা একদল যুবক। এ সময় বাধা দিলে হামলাকারীরা আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারসহ সাতজনকে পিটিয়ে আহত করে। গুরুতর আহতদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আহতরা হলেন সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাহেদুর রহমান, টিকার ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান খান (এমটিইপিআই), অ্যাম্বুল্যান্স ড্রাইভারের সহকারী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়, নাইটগার্ড রাহুল মিয়া, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারের গাড়ির ড্রাইভার হিরা মিয়া ও ওয়ার্ড বয় হারুন অর রশিদ হারুন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল থেকে ১২-১৭ বছর বয়সী ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু করা হয়। এমন সময় দুপুরে টিকা নিতে আসে একদল যুবক, যারা নিজেদের সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হিসেবে দাবি করে লাইনে দাঁড়াতে পারবে না বলে জানায়। এ সময় তাদের লাইন ছাড়া টিকা দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। এ কথা শুনে মুহূর্তেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতালের টিকার ইনচার্জ মো. আসাদুজ্জামান খান (এমটিইপিআই), অ্যাম্বুল্যান্স ড্রাইভার যুবাইদুল হকের সহকারী হৃদয় ও ওয়ার্ড বয় হারুন অর রশিদ হারুনকে মারধর শুরু করে।
সিকিউরিটি গার্ড রাউফুল আলম বলেন, ‘সকাল থেকে টিকা প্রদান চলছিল। আমি তখন ভেতরে ডিউটি করছিলাম। এমন সময় হট্টগোল শুনে বাইরে ছুটে আসি। বাইরে এসে দেখি প্রায় ৩০-৪০ জন যুবক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুল্যান্স ড্রাইভার যুবাইদুল হকের সহকারী হৃদয়, ওয়ার্ড বয় হারুন অর রশিদ হারুন, টিকার ইনচার্জ (এমটিইপিআই) মো. আসাদুজ্জামান খানকে মারধর করছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল-আমিন হোসাইন শিবলু জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যারা হামলা করেছে তারা ছাত্রলীগের কোনো সদস্য না। আর যদি কারো বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রমাণ মেলে তবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গাজী মোহাম্মদ রফিকুল হক বলেন, ‘টিকা প্রদান চলাকালে শনিবার দুপুরের দিকে একদল যুবক হাসপাতালের ভেতরে আসে। সবার আগে তাদের টিকা দিতে হবে বলে জানায় তারা। লাইনে দাঁড়াতে বলায় টিকার ইনচার্জ (এমটিইপিআই) মো. আসাদুজ্জামান খানকে মারধর শুরু করে তারা। বাধা দিতে গেলে সাতজনকে মারধর ও হাসপাতালে ভাঙচুর করে। কাউকে চিনতে না পারলেও ইতিমধ্যে আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা তাদের শনাক্ত করা যাবে।’
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মজিদ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’