নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় এক কলেজছাত্রীকে (১৭) যৌন নিপীড়ন ও প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
পুলিশ জানায়, যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার ওই ছাত্রীর বাবা গতকাল রোববার বিকেলে কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে সারোয়ার জাহান (২৭) এবং রবিন মিয়া (২২) নামের দুজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বাড়ি কেন্দুয়া পৌরসভার টেঙ্গুরী এলাকায়।
নির্যাতনের শিকার ছাত্রী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের পারভীন সিরাজ মহিলা কলেজে এইচএসসি পড়ুয়া ওই ছাত্রীকে পৌরসভার টেঙ্গুরী এলাকার মৃত মিন্টু মিয়ার ছেলে সারোয়ার জাহান দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছেন। মেয়েটিকে চলার পথে প্রেমের প্রস্তাবসহ কুপ্রস্তাবও দিতেন তিনি। এর মাঝে গতকাল রোববার দুপুরের দিকে মেয়েটি তার এক বান্ধবীকে নিয়ে উপজেলা সদরের নবান্ন রেস্টুরেন্ট খেতে যায়। এ সময় রেস্টুরেন্টের কর্মচারী রবিন মিয়ার ফোন পেয়ে সারোয়ার জাহান সেখানে গিয়েও তাকে যৌন নিপীড়ন করতে থাকেন।
একপর্যায়ে মেয়েটি রেস্টুরেন্ট থেকে চলে আসতে চাইলে সারোয়ার তাকে চড়-থাপ্পড় এবং কিল-ঘুষি মারে। এ সময় মেয়েটির কাছ থেকে মোবাইল ফোন এবং কানের দুলও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে মেয়েটির চিৎকারে অভিযুক্ত সারোয়ার রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে চলে গেলে মেয়েটিও তাঁর পিছু নেয়। এভাবে মেয়েটি তাঁর পেছনে পেছনে পৌরসভার টেঙ্গুরী মোড় এলাকা পর্যন্ত গেলে তাকে আবারও প্রকাশ্যে মাথার চুলের মুঠি ধরে টানা-হিঁচড়া এবং বেদম মারপিট করা হয়। এতে মেয়েটি জখম হওয়াসহ তার মাথার অনেকগুলো চুল ছিঁড়ে যায়।
পরে আলামত হিসেবে ছিঁড়ে ফেলা ওই চুলসহ তার বান্ধবীকে নিয়ে তিনি থানায় এসে পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। পরে খবর পেয়ে মেয়েটির অভিভাবকেরাও থানায় আসেন।
এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রী জানান, ‘সারোয়ার খুবই খারাপ ছেলে। তাঁর ভয়ে আমি লুকিয়ে লুকিয়ে কলেজে যেতাম। আমাকে রেস্টুরেন্টে এবং রাস্তায় প্রকাশ্যে মারপিট এবং মাথার চুলের মুঠি ধরে টানা-হিঁচড়া করার সময়ও তাঁর ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে গতকাল সোমবার বিকেলে কেন্দুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী জানান, এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা অভিযুক্ত সারোয়ার জাহান ও রবিন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে এটি এখনো মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি।