কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল্লাহ রবি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি কামাল মিয়াকে (৬০) গ্রেফতার করেছে র্যাব। র্যাব-১৪ সিপিসি-৩ ভৈরব ক্যাম্পের একটি দল আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ভৈরব উপজেলার রসুলপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। তিনি বাজিতপুর উপজেলার মাইজচর গ্রামের মৃত ছলিম উদ্দীনের ছেলে।
র্যাব ভৈরব ক্যাম্পের অধিনায়ক রফিউদ্দীন মোহাম্মদ যোবায়ের জানান, মাইজচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থিতা নিয়ে রবিউল্লাহর সাথে কামালের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে রবিউল্লাহকে হত্যা করে আসামিরা। তিনি আরও জানান, আসামি কামাল দীর্ঘদিন যাবত ভৈরবের রসুলপুর এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতারি সাজা মূলে তাকে বাজিতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
নিহত রবিউল্লাহ রবির ছেলে জাহিদউল্লাহ ফুরকান জানান, ২০০৩ সালে মাইজচর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হন তার বাবা। ২০০৫ সালের ২৫ এপ্রিল বাজিতপুর থেকে একটি মামলার হাজিরা দিতে কিশোরগঞ্জ আদালতের উদ্দেশ্য রওনা দেন তারা বাবা। এ খবর জেনে কামাল মিয়ার নেতৃত্বে তার সহযোগীরা উপজেলা পশু হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেয়। রবিউল্লাহ পশু হাসপাতালের সামনে পৌঁছামাত্র তারা লোহার রড ও হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে তার বাবার হাত পায়ের হাড় চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়। এরপর চাপাতি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে চলে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাজিতপুরের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০০৫ সালের ৫ মে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে রবিউল্লাহর স্ত্রী পারভীন আক্তার বাদী হয়ে কামাল মিয়াকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাজিতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৩ সালে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। তখনও ১৩ জন আসামির মধ্যে কামাল মিয়াসহ আরও চারজন পলাতক ছিলেন। এ রায়ে কামাল মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড ও অন্য আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।