শেরপুরে পৃথক মামলায় দুই ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আল মামুন জনাকীর্ণ আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে পৃথক এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, নালিতাবাড়ী উপজেলার গড়কান্দা মহল্লার আমির হোসেনের ছেলে মফিজুল ইসলাম কালু (৩৩) ও ঝিনাইগাতী উপজেলার তামাগাঁও গ্রামের মৃত শাহাজ উদ্দিন বেপারীর ছেলে বাচ্চু মিয়া (৫২)। একই সঙ্গে উভয় আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল।
চন্দন কুমার পাল জানান, বনিবনা না হওয়ায় মফিজুল ইসলাম কালুকে তালাক দিয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার উত্তর কোন্নগর এলাকার আরমান আলীর ছেলে বাবুল মিয়াকে (৩৫) বিয়ে করেন গৃহবধূ শাহিদা বেগম। এরপর শাহিদা বেগম স্বামী বাবুল মিয়ার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী খুজিউরা গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে বসবাস করছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে বাবুল ও শাহিদা প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা মফিজুল ছুরি দিয়ে বাবুলকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় শাহিদা ও স্থানীয় লোকজন কালুকে আটক করে পুলিশে দেন। পরে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় তদন্ত শেষে একই বছরের ১ মে একমাত্র আসামি মফিজুল ইসলাম কালুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল মোকাররম নুরউদ্দিন। বিচারিক পর্যায়ে বাদী, জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১২ জন আসামির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে কালুকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়।
অন্যদিকে জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট সন্ধ্যায় ঝিনাইগাতী উপজেলার ডাকাবর গ্রামের গোলাম রব্বানীর শিশুপুত্র ও স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আল মামুনকে (৭) স্কুলের খেলার মাঠ থেকে কৌশলে ডেকে নিজ ঘরে নিয়ে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাচ্চু মিয়া। এ ঘটনায় পরদিন থানায় মামলা হলে, তদন্ত শেষে একই বছরের ৩০ নভেম্বর বাচ্চু মিয়া ও সহিতন নেছার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন এসআই খোকন চন্দ্র সরকার। বিচারিক পর্যায়ে বাদী, জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১৬ জন আসামির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বাচ্চু মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সহিতন নেছাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।