তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুহাম্মদ বাকি বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে মুরাদ হাসানের করা অশ্লীল মন্তব্যকে ঘিরে কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল। এর মধ্যেই গতকাল ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁর ফোনালাপের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে তাঁকে হুমকিও দেন।
নারীবিদ্বেষী, অশ্লীল বক্তব্যের জন্য মুরাদ হাসানকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণের দাবি তুলেছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। এই পরিস্থিতিতে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, অশালীন, শিষ্টাচারবহির্ভূত ও নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় মুরাদ হাসানকে মঙ্গলবারের মধ্যে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আজ তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন মুরাদ হাসান। তবে শুধু প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকেই নয়, মুরাদ হাসানকে দল থেকেও বহিষ্কারের দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেত্রীরা। বিভিন্ন মহল থেকেও এই দাবি উঠেছে। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্ত এল।
মুরাদ হাসান ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়ে প্রথমবার সংসদে যান।
এরপর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে দ্বিতীয়বার জয়ী হন তিনি। এই দফায় সরকারে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একটি বিষয় নিয়ে চিকিৎসকদের আপত্তির মুখে সরকার গঠনের পাঁচ মাসের মাথায় ২০১৯ সালের মে মাসে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া জীবনবৃত্তান্ত অনুযায়ী, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ২০০০ সালে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি হন মুরাদ হাসান। তিন বছর পর যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য হন নির্বাচিত হন।
মুরাদ হাসান ২০১৫ সালে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ‘স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক’ নির্বাচিত হন।