প্রায় প্রতিরাতেই কোনো না কোনো কৃষকের গোয়াল ঘর থেকে গরু চুরি বা চুরির চেষ্টার ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে এলাকবাসী। অবশেষে নিজেদের বসানো পাহারায় এক গরুচোর আটকা হয়। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী চোরাই গরু উদ্ধার ও চোরের সাঙ্গ-পাঙ্গদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
আজ মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বৈরাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশ কর্মকর্তারা এসে গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে পাশের একটি মাদরাসার মাঠে নিয়ে যান। পরে গ্রামবাসীদের উদ্দেশে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল কাদের মিয়া বক্তব্য দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
স্থানীয় সূত্র ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের বৈরাটি গ্রামটি। গত শনিবার গভীর রাতে ওই গ্রামের হতদরিদ্র মো. আবদুল হাইয়ের গর্ভবতী একটি গাভী চুরি ছাড়াও বেশ কয়েকজন কৃষকের গোয়াল ঘর থেকে গভীর রাতে গরু চুরির চেষ্টা হয়। এরপর পর থেকে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী সতর্ক হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় নিজেরাই রাত জেগে পাহারা দেওয়া শুরু করেন তারা। গতকাল সোমবার রাতে একদল চোর ওই গ্রামে প্রবেশ করলে গ্রামবাসী সতর্ক হয়ে পড়ে। তারা একে অপরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে লাঠিসোটা নিয়ে চারপাশ থেকে ছুটে আসতে থাকেন। গ্রামবাসীদের ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন মোজাম্মেল নামে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তি। যিনি এর আগেও গরু চুরিসহ নানা অপরাধে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্রামবাসীর ধাওয়ার মুখে মোজাম্মেল একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। লোকজন চারপাশ থেকে পুকুরটি ঘেরাও করে রাখে। এ সময় হঠাৎ করেই ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে মোজাম্মেলকে উদ্ধার করে নিয়ে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়।
বৈরাটি গ্রামের মো. মোস্তুফা বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ধরার পড়ার পর কয়েকজন চোরের নাম বলেছে। পুলিশের লোকজন ওই রাতে গ্রমাবাসীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোজাম্মেলকে সাথে নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ওই ব্যক্তিদের ধরার জন্য অভিযান চালাবে। কিন্তু পুলিশ না আসায় গ্রামবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এসময় কিছুক্ষণের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, যে কৃষকের গরু চুরি হয়েছে তাকে মামলা করার কথা বলা হয়েছে। এরপর ওই মামলায় অভিযুক্ত চোরকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।