ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় কংশ নদের পাড়ের মাটি কাটার ফলে হুমকির মুখে রয়েছে নদের তীরে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান। প্রতিনিয়ত মাটি কাটার ফলে হুমকির মুখে রয়েছে কংশ নদের ওপর নির্মিত ব্রিজটিও। স্থানীয়দের ধারণা, বৃষ্টি হলেই মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় এ স্থানটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যার স্থান সরচাপুর গোদারাঘাট। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক অসহায় মানুষ এ সড়ক পথে হালুয়াঘাট দিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ট্রেনিং করার জন্য হাজার-হাজার মুক্তিযোদ্ধা ভারতে চলে যেতেন এ ব্রিজ দিয়ে। এ খবর স্থানীয় রাজাকার-আলবদরদের মাধ্যমে পাকিস্থানি সেনা ক্যাম্পে চলে যায়। এ সময় সাধারণ মানুষের এ মানসিক শক্তিকে থামানোর জন্য পাকসেনারা সরচাপুর গোদারাঘাটে শক্তিশালী ঘাঁটি ঘড়ে তোলে। পাকিস্থানি সেনারা তল্লাশির নামে সাধারণ নীরিহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে। অনেক মুক্তিযোদ্ধা পাকসেনাদের চেকপোস্টে ধরা পড়েন। তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ কংশ নদে ভাসিয়ে দেওয়া হতো। সে সময়ে এ স্থানটি হয়ে ওঠে বিভীষিকাময় নরকঘাঁটি।
জানা যায়, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে এ স্থানে একটি কমপ্লেক্স নির্মাণের চেষ্টা চলছে। অপরদিকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে এ স্থানটিকে শেষ করার পাঁয়তারা একটি কুচক্রী মহলের।
এ বিষয়ে স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সাংবাদিক এ টি এম রবিউল করিম বলেন, ময়মনসিংহের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যার স্থান সরচাপুর গোদারাঘাট। ভেকু দিয়ে মাটি কাটার ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে গণহত্যার এ স্থানটি। আশা করি স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে নজর দেবে।
ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থান ও কংশনদের ব্রিজসংলগ্ন স্থান থেকে কাউকে মাটি কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। যারা অবৈধভাবে মাটি কাটছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।