কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে মেয়েকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। উপজেলার দেহুন্দা ইউনিয়নের চরদেহুন্দা গ্রামে বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাইশা আক্তার (১৬) ওই এলাকার মো. বাবুল মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় নিহতের মা স্বপ্না আক্তারকে (৪০) বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আটক করেছে পুলিশ। আটক স্বপ্না চরদেহুন্দা গ্রামের তাহের উদ্দিনের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, স্বপ্না আক্তারের সঙ্গে তার খালাতো ভাই ফায়জুলের দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া সম্পর্ক চলছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিস বসে। তার পরেও ফায়জুলের যাতায়াত ছিল ওই বাড়িতে। মায়ের এই সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় তারা দুজনে মিলে মাইশাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে তাদের অভিযোগ।
মাইশার নানি বেদেনা আক্তার (৬৫) জানান, তিনি তার নাতিকে ছোট থেকে লালন করেছেন। স্বপ্না তার মেয়ের খোঁজ রাখতেন না। আজ সকালে স্বপ্না জানায়, হঠাৎ স্ট্রোক করে মাইশা মারা গেছে। কিন্তু লোকজন মাইশার গলা ও সারা শরীরে দাগ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
মাইশাদের এক আত্মীয় বিপুল মিয়া জানান, মাইশার মৃত্যুর পর স্বপ্না আক্তার পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। আর রাতেই আরেক অভিযুক্ত ফায়জুল মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়।
জানা গেছে, স্বপ্না আক্তারের সঙ্গে ২০-২৫ বছর আগে বিয়ে হয় রাজশাহীর বাবুল মিয়ার সঙ্গে। বাবুল ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
বাবুল মিয়া জানান, ফায়জুলের সঙ্গে তার স্ত্রীর কোনো সম্পর্ক ছিল কি না জানতেন না তিনি। তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট ছেলেটি তার সঙ্গে ঢাকায় থাকত। আর মাইশা বাড়িতে মায়ের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করত।
করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম সিদ্দিকী জানান, মা স্বপ্না আক্তার নিজেই তার মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন বলে পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন। তবে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ফায়জুলের সঙ্গে তার মেয়ের সম্পর্ক ছিল। এ কারণেই মেয়েকে হত্যা করেছেন তিনি। তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে।
তিনি আরো জানান, ফায়জুলকে ধরতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। নিহত মাইশার বাবা বাবুল মিয়া বাদী হয়ে করিমগঞ্জ থানায় স্বপ্না ও ফায়জুলের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।