জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চোর সন্দেহে সবুজ মিয়া (১৩) নামের এক স্কুলপডুয়া শিক্ষার্থীকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় গতকাল রবিবার (২৪ অক্টোবর) রাতেই ওই শিক্ষার্থীর বাবা মুকাজ্জেম মিয়া বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
শিক্ষার্থী সবুজ মিয়া সরিষাবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে ওই উপজেলার আওনা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মো. মুকাজ্জেম মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে বাড়ির পাশে অবস্থিত ঝিনুক মিয়ার মুদির দোকানে বাড়ির প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে যায় স্কুলশিক্ষার্থী সবুজ মিয়া। এ সময় দোকানদার ঝিনুক, তার ভাই দিলন, দুলাল ও দেদুল সবুজকে পাশের ধানক্ষেতে ডেকে নিয়ে যান। এ সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের বাড়িতে চুরির ঘটনায় তাকে সন্দেহ করে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা সবুজের গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে চুরির ঘটনায় জোর করে তার স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে তারা সবুজকে টেনে হিঁচড়ে বাড়িতে নিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। এরপর ঝিনুক মিয়া, দিলন, দুলাল, দেদুল ও তাদের পরিবারের লোকজন হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সবুজ অচেতন হয়ে পড়লে তাকে তার বাড়ির উঠানে ফেলে আসেন। অচেতন অবস্থায় পরিবারের লোকজন দেখতে পেয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে তাতেও তারা বাধা দেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
শিক্ষার্থী সবুজ মিয়ার বাবা মুকাজ্জেম জানান, বাড়ির কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ছেলেকে দোকানে পাঠালে চুরির অপবাধ দিয়ে দোকানদার ও তার ভাই দিলন, দুলাল ও দেদুল ধানক্ষেতে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। চুরির ঘটনা স্বীকার না করায় বাড়িতে নিয়ে ফের ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করেছেন। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চাইলেও তারা বাধা দেন। এলাকায় তারা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে অনেকেই ভয় পায়। এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক বলেন, ‘চোর সন্দেহে স্কুলপডুয়া এক শিক্ষার্থীকে ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে- মর্মে গতকাল রবিবার রাতে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’