বরাদ্দ পাওয়া প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ওঠা হলো না শারীরিক প্রতিবন্ধী জান্নাত হাসানের (১৮)। নতুন ঘরে ওঠার আগেই আজ বৃহস্পতিবার (৭ অক্টেবর) সকালে অজ্ঞাত গাড়িচাপায় নিভে গেল তার জীবনপ্রদীপ।
উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। জান্নাত হাসান উপজেলার বিরুনীয়া গ্রামের মো. তাইজ উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার সময় ওই স্থান দিয়ে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী অজ্ঞাত গাড়িচাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরে ভালুকা উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শারীরিক প্রতিবন্ধী জান্নাত হাসান। তার চারটি হাত-পা ছিল বাঁকা। কখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারতেন না। দুই পা আর কাঠের ছোট একটা পিঁড়ির ওপর একহাতে ভর দিয়েই ছিল তার চলাচল। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও জান্নাত হাসানের মনের জোর অনেক বেশি। জান্নাত হাসানের বাবা দরিদ্র তাইজ উদ্দিন ভাড়া বাসায় বসবাস করেন, তিনি ভালুকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। তার মা মাসুদা খাতুন গৃহিণী। অভাবের সংসারে বাবাকে কিছুটা সহায়তা দেওয়ার জন্য ভিক্ষাবৃত্তিতে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি।
জান্নাত হাসানের অসহায়ত্বের কথা জেনে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুন তার নামে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর বরাদ্দ দেন।
স্থানীয়রা জানান, জান্নাত হাসান দিনের বেশির ভাগ সময় ভালুকা পৌরসভার শহীদ মান্নান সড়কের তানিয়া স্টোরের সামনে বসে ভিক্ষে করতেন। তবে বেশি রোজগারের আশায় মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাত ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকায় যেতেন। আজও ভিক্ষা করার জন্য মাস্টারবাড়ি এলাকায় গিয়েছিলেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুন জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় জান্নাত হাসানের মৃত্যুর খবরটি পাওয়ার পর মনটাই খারাপ হয়ে গেছে। অসহায়ত্বের কথা জেনে তার নামে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর বরাদ্দ দিয়ে তাকে যাবতীয় কাগজপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘর হস্তান্তরের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন ছিল। তার আগেই চলে গেলেন তিনি।