যৌতুকের কারণে স্বামীর দেওয়া গরম তেলে ঝলসে যাওয়া সেই গৃহবধূ স্বর্ণা বেগম (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ দিন পর মারা গেছেন। আজ বুধবার ভোরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহতের মা শিরিন বেগম।
নিহত গৃহবধূ স্বর্ণা সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের পিংনা বাজার এলাকার সেজনু মিয়ার (৪০) স্ত্রী। শরীর ঝলসে দেওয়ার ৫ দিন পর স্বর্ণার মা শিরিন বেগম বাদী হয়ে ঢাকা সাভার থানায় মামলা করলেও আসামিকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই তার জামাই সেজনু মেয়েকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছিল। এ ব্যাপারে এর পূর্বে আদালতে মামলা হয়েছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা করে মেয়েকে জামাইয়ের কাছে পাঠানো হয়। পুনরায় তাকে নির্যাতন শুরু করা হলে স্বর্ণা বেগম বাধ্য হয়ে সাভারের জিরানী এলাকায় গিয়ে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। মেয়ের ভাড়া বাসার ঠিকানা সংগ্রহ করে ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে সেজনু মিয়া সেখানে যান। তারপর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তিনি তার স্ত্রীর শরীরে গরম তেল ঢেলে দেন। এতে তার পুরো শরীর ঝলসে যায়। স্বামী সেজনু রাতেই তাকে জিরানী থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পর দিন ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ফেলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি দেখা দিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হলে সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসার পর আজ বুধবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
তারাকান্দি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল লতিফ জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘাতক স্বামী সেজনু মিয়ার বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক।