টিকটক চক্রের খপ্পরে পড়ে ঢাকা থেকে অপহৃত অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় অপহরণকারী চক্রের অন্যতম হোতা রায়হান হোসেনকে (২২) গ্রেফতার করা হয়। এ টিকটক গ্রুপের দুজন সদস্য রবিন ও খোকন পলাতক।
রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুলে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী বাসা থেকে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। এরপর ওই ছাত্রী আর বাসায় না ফেয়ার তার বাবা কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। কয়েকদিন পরও ওই ছাত্রী বাসায় না আসায় পরে ভুক্তভোগীর বাবা র্যাব-৪ বরাবর একটি অভিযোগ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাবের একটি দল এটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাবের আভিযানিক দল শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়ে অপহৃত ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। এ সময় অপহরণকারী চক্রের অন্যতম হোতা রায়হান হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, অপহরণকারীরা একটি টিকটক গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপে ৭-৮ জন সদস্য রয়েছে। যারা ঘন ঘন লাইভে এসে একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন বাক্য বিনিময় করে তথ্য আদান-প্রদান করে। ওই গ্রুপের অন্যতম সদস্য রাজধানী নর্দার আজিজ সড়কে বসবাসকারী গ্রেফতার রায়হান। এ গ্রুপের আরও দুজন সদস্য রয়েছে। তারা হলেন- রবিন ও খোকন। এরা পলাতক।
তিনি বলেন, রায়হান একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে গাড়ি চালাতেন। তার স্ত্রী ও সন্তান নারায়ণগঞ্জে থাকেন। খোকন অন্য একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করেন আর রবিন নর্দায় একটি সেলুনে কাজ করেন।
এই টিকটক গ্রুপের অন্যতম দুইজন সদস্য মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী বলে গ্রেফতার রায়হানকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। এই টিকটক গ্রুপের সদস্যরা স্কুলপড়ুয়া উঠতি বয়সী মেয়েদের প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে বিপথে পরিচালিত করতো। টিকটক গ্রুপের সদস্যরা নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে বলেও জানা গেছে। তারা টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেনামি পরিচয় ব্যবহার করতো। অপহৃত ভুক্তভোগী বেশ কিছুদিন ধরে এই টিকটক গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিল। নিখোঁজ হওয়ার দিন অপহৃত ভুক্তভোগী বাসা থেকে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বের হয়।
গ্রেফতার রায়হান বিভিন্ন প্রলোভনে ওই ছাত্রীকে নর্দায় আজিজ রোডের একটি ভাড়া করা বাসায় আটকে রাখে। এরপর ওই ছাত্রীর পরিবার তাকে খুঁজে পেতে পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছে জানতে পেরে কৌশলে ওই বাসা থেকে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে পাঠিয়ে দেয় রায়হান।
আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ভবিষ্যতেও শিশু অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় র্যাব।