ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ডাকাতির ঘটনায় ৫ রেল ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪। শনিবার দিবাগত রাতে তাদের ময়মনসিংহ নগরীর বাঘমারা ও শিকারিকান্দা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- আশরাফুল ইসলাম স্বাধীন (২৬), মাকসুদুল হক রিশাদ (২৮), মো. হাসান (২২), রুবেল মিয়া (৩১), মোহাম্মদ (২৫)। তারা ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দা।
র্যাব সূত্র জানায়, এ লোমহর্ষক ঘটনার পরপরই ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, পারিপাশ্বির্কতা বিচার ও নিহতের বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে ডাকাতদলের সন্ধান পেয়ে যায় র্যাব। মধ্যরাতে সর্বপ্রথম আশরাফুল ইসলাম স্বাধীনকে (২৬) ময়মনসিংহের শিকারীকান্দা এলাকা থেকে বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে লুট হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চেইন অপারেশনের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মাকসুদুল হক রিশাদ (২৮), মো. হাসান (২২), রুবেল মিয়া (৩১), মোহাম্মদকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া মোবাইল উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের দেখানো জায়গা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, ট্রেনে ডাকাতির উদ্দেশে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চারজন পেশাদার ডাকাত দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ওঠে। রিশাদ, হাসান এবং স্বাধীন টঙ্গী স্টেশন থেকে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। ট্রেনটি ফাতেমানগর স্টেশনে থামলে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় মোহাম্মদসহ আরেক সহযোগী। ট্রেন স্টেশন ছেড়ে চলতে শুরু করলে তারা ইঞ্জিনের পরের বগির ছাদে বসে থাকা যাত্রীদের মোবাইল ও টাকা লুট শুরু করে। ডাকাতির একপর্যায়ে মো. সাগর মিয়া ও নাহিদ বাধা দিলে তাদের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে ভিকটিমদের মাথায় এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। সাগর ও নাহিদ আঘাতে লুটিয়ে পড়লে ডাকাতরা ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে প্রবেশের আগে সিগন্যালের কাছে নেমে যায়।
র্যাব জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ চক্রটি নিয়মিত ডাকাতি করে আসছে। তারা ঢাকার কমলাপুর, এয়ারপোর্ট ও টঙ্গী রেলস্টেশন থেকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ট্রেনে ওঠে। তাদের সহযোগী গফরগাঁও-ফাতেমানগর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে সম্মিলিতভাবে ট্রেনে ডাকাতি ও ছিনতাই করে ময়মনসিংহ স্টেশনে নেমে যায়। ঘটনার দিন তারা ছিনতাইয়ের পরিবর্তে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। তারা ছোট ছোট গ্রুপে উপ-গ্রুপে ভাগ হয়ে ডাকাতি ও ছিনতাই করত। এ গ্রুপগুলোর কেউ টার্গেট শনাক্ত করত, কেউ নিরাপত্তা দেখত, কেউ লুট করা মালামাল বিক্রি করত। রিশাদ এ চক্রের মূল হোতা। তার নামে আগে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় মামলা ছিল। রিশাদ বর্তমানে জামিনে আছে।
র্যাব-১৪-এর উইং কমান্ডার রোকনুজ্জামান বলেন, ‘এ চক্রটি প্রায়ই ট্রেনে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটাত। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’