জেনে-শুনেই ব্যবসায়িক অপকৌশল বেছে নেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এমন তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
আজ সকালে র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। কমান্ডার মইন বলেন, গ্রেপ্তার রাসেল ও তার স্ত্রীর ব্যবসায়িক অপকৌশল ছিল নতুন গ্রাহকের উপর দায় চাপিয়ে দিয়ে পুরাতন গ্রাহক ও সরবরাহকারীর দায়ের (লায়াবেলিটিস) অল্প অল্প করে পরিশোধ করা। অর্থাৎ ‘সায় ট্রান্সফার’ এর মাধ্যমে দুরভিসন্ধিমূলক অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছিল ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানটির নেটওয়ার্কে যত গ্রাহক তৈরি হত, সায় (লায়াবেলিটিস) তত বাড়ত। তারা জেনেশুনে এ নেতিবাচক স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
র্যাব-এর এই মুখপাত্র আরও বলেন, ব্যবসায়িক বিক্রি বাড়াতে গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত চাহিদা তৈরি হয় এ ধরনের পণ্যকে বেছে নেয় ইভ্যালি। যেমন- মোবাইল, টিভি, ফ্রিজ, এসি, মোটরবাইক, গাড়ী, গৃহস্থলীপণ্য, প্রসাধনী, প্যাকেজ ট্যুর, হোটেল বুকিং, জুয়েলারী, স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী ও ফার্নিচার ইত্যাদি।
এসব পণ্যের মূল্য ছাড়ের ফলে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানের বিশাল আকারে দায় (লায়াবেলিটিস) তৈরি হয়।
তিনি আরও জানান, রাসেল ও তার স্ত্রী পদাধিকারবলে নিজেরা মাসিক ৫ লাখ টাকা করে বেতন নিতেন। তারা কোম্পানির অর্থে ব্যক্তিগত দুটি দামি গাড়ি (রেঞ্জ রোভার ও অডি) ব্যবহার করেন। এছাড়া কোম্পানীর প্রায় ২৫-৩০টি যানবাহন রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে সাভারে রাসেলের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জায়গা-জমিসহ অন্যান্য সম্পদ রয়েছে।
তিনি বলেন, ইভ্যালির বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ টাকা রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি গেটওয়েতে ৩০-৩৫ কোটি গ্রাহকের টাকা আটক হয়ে আছে বলে রাসেল জানান।
উল্লেখ্য, প্রতারণার অভিযোগে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল বিকালে রাসেলের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গুলশান থানায় তাদের নামে প্রতারণার মামলা হওয়ার প্রেক্ষিতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে। তবে তারা আগে থেকেই র্যাবের নজরদারিতে ছিলেন। তাদের দেশ ত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা ছিল। র্যাব তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাবের সদর দপ্তর উত্তরায় নিয়ে যায়। আজ শুক্রবার তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।
এর আগে রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা হয়। আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির একজন গ্রাহক মামলাটি করেছেন।