পঁচা ও নিম্নমানের মরিচ, হলুদ কিংবা ধনিয়া। তাও পরিমাণে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। সঙ্গে মেশানো হয় ভুষি, পাউডার, কাঠের গুড়া, ক্ষতিকর রং ও আগাছা। মিলে প্রক্রিয়াজাতের পরে এসব যাচ্ছে বাজারে।
খাবার মসলা নিয়ে ভেজাল কারবারিদের এমন রমরমা বাণিজ্য চলছিল কিশোরগঞ্জে। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদরের পল্লী এলাকার একটি মসলা মিলে র্যাব অভিযান চালিয়ে আটক করে মসলা তৈরির অভিনব এসব উপকরণ।
১,৫৮০ কেজি ভেজাল মসলা ছাড়াও ৬৩০ কেজি মসলার মিশ্রণের জন্য পাওয়া যায় ভুষি, পাউডার, কাঠের গুড়া, ইন্ডাস্ট্রিয়াল কালার, আগাছা আর নিম্নমানের মসলা। পরে জব্দকৃত এসব ভেজাল মসলা ও মসলার মিশ্রণ বিনষ্ট করে মসলা মিলটির মালিক রুবেল মিয়া (৩৩) কে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
মিল মালিক রুবেল মিয়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের বড়ভাগ উত্তরপাড়া গ্রামের মো. রহমত আলীর ছেলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, র্যাব-১৪ এর সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লে. কমান্ডার এম শোভন খান বিএন এর নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের বড়ভাগ উত্তরপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে গ্রাম বাংলা মসলা মিল নামে একটি ভেজাল মসলা মিলের সন্ধান পান। সেখানে মিলমালিক রুবেল মিয়া তিন মাস ধরে ভুষি, পাউডার, কাঠের গুড়া, ইন্ডাস্ট্রিয়াল কালার ও আগাছা মিশিয়ে ধনে, হলুদ ও মরিচের গুড়া উৎপাদন করে আসছিল। এসব ভেজাল মসলা পাইকারি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে যেতো জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকার দোকানে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হৃদয় রঞ্জন বনিককে সাথে নিয়ে র্যাব মসলা মিলটিতে অভিযান চালিয়ে রুবেল মিয়াকে আটক করে।
এ সময় ১,৫৮০ কেজি ভেজাল মসলা, ১০০ কেজি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কালার, ৮০ কেজি কাঠের গুড়া, ৪৫০ কেজি পঁচা মরিচ জব্দ করে পার্শ্ববর্তী ডোবায় ফেলে ধংস করা হয়।
পরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হৃদয় রঞ্জন বনিক মিল মালিক রুবেল মিয়াকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন।
তিনি জানান, বিপুল পরিমাণ ভেজাল মসলা ছাড়াও ভেজাল গুড়া মরিচ, হলুদ ও ধনিয়া তৈরি করে বাজারজাত করার জন্য ৬৩০ কেজি ভেজাল উপকরণ মজুদ করা হয়েছিল। এটি নিশ্চিতভাবে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।