চলতি মাসের ১২ আগস্ট ২০০ আসনবিশিষ্ট সি-ট্রাক সেবা চালু হয় বগুড়ার সারিয়াকান্দির কালীতলা ঘাট থেকে জামালপুর জামথল ঘাট পর্যন্ত। উদ্বোধনের ১১ দিনের মাথায় বিকল হয়ে পড়েছে বহু কাঙ্ক্ষিত সি-ট্রাক সার্ভিস। এতে চার দিন ধরে বগুড়া-জামালপুর নৌরুটে সি-ট্রাকে চলাচলকারী যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। তারা এখন বিকল্প নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। তবে শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে সি-ট্রাক সার্ভিসের ইজারাদার জানান, এটি ঠিক হতে আরো দুদিন সময় লাগবে।
গত ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডাব্লিউটিসি) পরিচালিত শহীদ আবদুর রউফ সেরনিয়াবাত সি-ট্রাকের ইঞ্জিন বিকল হয়।
এর আগে ১২ আগস্ট ২০০ আসনবিশিষ্ট সি-ট্রাক সেবা চালু হয় সারিয়াকান্দির কালীতলা ঘাট থেকে জামথল ঘাট পর্যন্ত। ওই দিন সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের জামথল ঘাটে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সি-ট্রাকের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরপরই যাত্রী নিয়ে ‘শহীদ আবদুর রউফ সেরনিয়াবাত’ নামের সি-ট্র্রাকটি যাত্রী পারাপার শুরু করে।
শুরু থেকেই সি-ট্রাক কম যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করে। কিন্তু ২৩ আগস্ট কালীতলা ঘাট ছাড়ার পর মাঝনদীতে গিয়ে এটি বিকল হয়ে যায়। ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ায় ২৪ আগস্ট থেকে যাত্রী পারাপার বন্ধ আছে। সি-ট্রাক সার্ভিস বন্ধ হওয়ায় দুই পাড়ের মানুষ আশাহত হয়েছেন। চালু হতে না হতেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা নানা ধরনের মন্তব্য করছেন। তবে সি-ট্রাক চালু হওয়ার পর বগুড়া, জামালপুরসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে লোকজন প্রতিনিয়ত যাতায়ত করছিল।
রংপুরের বাসিন্দা হোসেন নামের একজন বলেন, আমি এবং আমার সাত সহপাঠীসহ রংপুর থেকে এখানে এসেছিলাম সি-ট্রকে ভ্রমণ করতে। এসে জানতে পারলাম কয়েক দিন ধরে সি-ট্রাক বন্ধ রয়েছে।
এদিকে সি-ট্রাক সার্ভিস বন্ধ হওয়ায় এই নৌ রুটে খেয়ানৌকা, ভাড়া নৌকা এবং রিজার্ভ নৌকাগুলোতে যাত্রীর অতিরিক্ত চাপ বেড়ে গেছে। খেয়ানৌকাতে ১০০ এর বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। মোটরসাইকেলে পরিপূর্ণ ছিল নৌকাগুলো। অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় নৌকাডুবির আশঙ্কা রয়েছে।
সারিয়াকান্দি ঘাটে কথা হয় এনজিওকর্মী সংগ্রামের সঙ্গে। তিনি জানান, আমি জামালপুরের সরিষাবাড়িতে চাকরি করি। আমার বাড়ি সারিয়াকান্দির পারতিত পরল গ্রামে। সি-ট্রাক সার্ভিস বন্ধ থাকায় আমার চলাচলে অনেক অসুবিধা হচ্ছে।
সি-ট্রাক সার্ভিসের ইজারাদার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ১২ আগস্ট জামথল ও কালিতলা ঘাটের মধ্যে সি-ট্রাকে প্রতিদিন একবার করে যাত্রী পারাপার শুরু হয়। ২৩ আগস্ট যাত্রী নিয়ে ঘাট ছাড়ার পর যমুনা নদীতে সি-ট্রাকের ইঞ্জিন বিকল হয়। পরে উদ্ধারকারী ফেরি এনে এটিকে ঘাটে নেওয়া হয়।
ইঞ্জিন মেরামত করতে বিআইডাব্লিউটিসি নারায়ণগঞ্জ ডাকইয়ার্ড থেকে মেকানিক পাঠিয়েছে। তবে এটি মেরামত করতে আরো দুদিন সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সি-ট্রাক বিকল হওয়ায় যাত্রী পারাপারে সমস্যা হয়েছে। বিআইডাব্লিউটিসি ত্রুটি মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আশা করি অতিদ্রুতই ঘাটে পারাপার স্বাভাবিক হবে।