টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিজেদের জমিতে মাছ চাষে বাধা দেওয়ায় যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে কুপিয়ে ও পিটিয়ে ছয় গ্রামবাসীকে আহত করার মামলায় চার হামলাকারীকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালতের বিচারক।
রবিবার (২২ আগস্ট) টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রুপম কুমার দাসের আদালতে মামলার ১৩ আসামির মধ্যে সাতজন হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে চারজনকে জেল হাজতে পাঠান বিচারক।
জেল হাজতে গেলেন তারা হলেন- মামলার ৬ নম্বর আসামি উজ্জ্বল মিয়া, ৭ নম্বর আসামি মিজান, ৮ নম্বর আসামি দলিল লেখক রাকিব ও ৯ নম্বর আসামি শাকিল দেওয়ান। তবে ১০ নম্বর আসামি পনির, ১১ নম্বর মনি মিত্র ও ১৩ নম্বর জহিরুল ইসলাম জামিনে ছাড়া পান।
মামলার এক নম্বর আসামি মির্জাপুর পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আল মামুন, দুই নম্বর আসামি তার ছোট ভাই জুয়েল দেওয়ান, তিন নম্বর আসামি পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রাজ্জাকের ছোট ভাই লতিফ শিকদার, ৪ নম্বর আরিফ মিয়া, ৫ নম্বর শামীম শিকদার ও ১২ নম্বর মামুনের বাবা আরফান দেওয়ান আদালতে হাজির হননি বলে জানা গেছে।
যুবলীগ নেতা দেওয়ান আল মামুন বাইমহাটী গ্রামের লোকজনের জমি জোরপূর্বক দখল নিয়ে মাছ চাষ করছিলেন। গত ১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার গ্রামবাসী তাদের জমিতে মামুনের ঘেরাও দেয়া জাল তুলে ফেলতে গেলে যুবলীগ নেতা মামুন ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা লতিফ শিকদারের নেতৃত্বে ১২/১৫ জনের একটি দল রামদা, টেটা ও লাঠি নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলায় জমির মালিক নজরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, শাহিন, শামীম ও সাজ্জাত হোসেন আহত হন। তাদের মধ্যে বিল্লাল ও নজরুল আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাসহ ১৩ জনের নামে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।
এদিকে গ্রামবাসীর ওপর হামলাকারী আসামিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বাইমহাটি ও পার্শ্ববর্তী কদিম দেওহাটা গ্রামবাসী ১৯ আগস্ট ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের (পুরাতন) মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। এ সময় যুবলীগ নেতা মামুনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে গ্রামবাসী শ্লোগান দেন। এছাড়া মামুনকে যুবলীগ থেকে বহিস্কার পরবর্তী তাকেসহ সাঙ্গপাঙ্গদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নঈম উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, বাইমহাটী গ্রামের লোকজন মামুন বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ওই বাহিনীর নির্যাতনের প্রতিবাদে গ্রামের নারী পুরুষ রাস্তায় নেমেছে। তারা মামুনকে যুবলীগ ও লতিফকে স্বেচ্ছাসেবকলীগের পদ থেকে বহিষ্কার পরবর্তী গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান উকিল চার আসামির জেলহাজাতে প্রেরণের কথা নিশ্চিত করে বলেন, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।