কলেজছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে মেয়েটি বিয়ের কথা বললে বেঁকে বসে লাপাত্তা হয় যুবক। গত এক মাস আগে থানায় মামলা হলেও পুলিশ এখনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এদিকে মামলা তুলে নিতে ধর্ষকের বড় ভাইয়ের বিভিন্ন ধরনের হুমকির মুখে ওই কলেজছাত্রী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বেশ কয়েকদিন ধরে ওই কলেজছাত্রীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, লেখা হচ্ছে – ‘ওয়েট অ্যান্ড সি, টক অ্যাবাউট দ্য টাইম’। এ ঘটনায় থানায় লিখিতভাবে জানালেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে। তিনি স্থানীয় একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। পাশের মমরোজপুর গ্রামের আমিনুল হকের ছেলে মো. সোহেল রানা (২৬) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কলেজছাত্রীর সাথে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলেন।
ওই ছাত্রী জানান, বিয়ে করার কথা বলে সোহেল রানা তাকে গত প্রায় এক বছর ধরে আশ্বাস দিয়ে আসছেন। এর মধ্যে গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বেড়াতে যেতেন সোহেল। একপর্যায়ে তাকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যান স্ত্রী পরিচয়ে। সেখানে একরাতে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় মেয়েটিকে। পরে বিয়ের কথা বললে বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা শুরু করেন সোহেল। তবে পরে পরিবারের সম্মতি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দেন। এর মধ্যে একদিন ফের মেয়েটিকে ডেকে নেওয়া হয় ঈশ্বরগঞ্জ সদরে। সেখানে গত ১ জুলাই ছেলেটি তার বড় ভাই মো. আনিসুল হকের বাসায় নিয়ে যান। ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে কাজী ডেকে এনে বিয়ের কথা বলে আবারও ধর্ষণ করে লাপাত্তা হয়ে যান সোহেল। ঘটনাটি নিয়ে সোহেল রানার পরিবারের কাছে বিচার দাবি করলে তারা কোনো ফয়সালা না করায় আইনের আশ্রয় নিয়েছেন কলেজছাত্রী। এ অবস্থায় গত ২০ জুলাই ধর্ষণের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলাটি নথিভুক্ত করে। তবে গত প্রায় এক মাসেও পুলিশ অভিয়ুক্ত ধর্ষক সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
কলেজছাত্রী বলেন, আমি মামলা করে প্রতিনিয়ত হুমকি পাচ্ছি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু থেমে থাকেননি ধর্ষক ও তার ভাই আনিসুল হক। বড় ভাই আনিসুল ফোনে ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে অকথ্য ভাষায় গালাগালসহ হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন মেয়েটিকে। কিন্তু কোনো বিচার পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে ধর্ষকের বড়ভাই আনিসুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে তা অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে হুমকি প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মেয়েটিকে আমি চিনতাম না। তাই না চিনে হুমকি দিয়ে ফেলেছি। আমার ভুল হয়ে গেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বলেন, আসামিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পেলেই গ্রেপ্তার করা হবে।