ময়মনসিংহের নান্দাইলের চরবেতাগৈর ইউনিয়নের ৬নং চর উত্তরবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের চালের টিন, দেয়ালের ইট ও দরজা-জানালাসহ বেঞ্চ টেবিল সব কিছুই নিয়ে গেছে। ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পর করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। বর্তমানে ভবনটি শুধু পিলারের উপর ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যেকোনো সময় সেটি পড়ে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই ইউনিয়নের চর উত্তরবন্দ বাজারের পাশে বিদ্যালয়টি ৫০ শতক জমির উপর ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৩ সালে সেটি জাতীয়করণ করা হয়। এর পশ্চিম পাশে রয়েছে এমএইচ উচ্চ বিদ্যালয় এবং উত্তর পাশে রয়েছে একটি মাদরাসা। চার শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত বিদ্যালয়ে বর্তমানে রয়েছে ৩৪০ জন শিক্ষার্থী। চারকক্ষ বিশিষ্ট পুরাতন আধাপাকা ভবনটিতে স্থান সংকুলান না হওয়া ৫/৬ বছর পূর্বে মাঠের দক্ষিণপাশে নির্মিত হয় একটি একতলা ভবন। সেখানেই চলে আসছে পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে সেটি তিনতলা করা হয়েছে। কিন্তু একতলা ভবনটি নির্মিত হবার পর থেকেই পুরাতন ভবন থেকে ইট, দরজা-জানালা ও চালের টিন খুলে নেওয়ার মহোৎসব শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিমি দূরে অবস্থিত বিদ্যালয়ে গিয়ে ভবন থেকে ইট দরজা জানালা খুলে নেওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। এখন চাল থেকে টিন খুলে নেওয়া শুরু হয়েছে। প্রতিবেশী ফজলুল হক ও মোফাজ্জল হোসেন জানান, ভবনটি নিলামে বিক্রি হবে শুনেই যে যার মতো করে জিনিসপত্র খুলে নিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন জানান,২০১৮ সালে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করে করার সময়ও তিনি ভবনটির এমন দশা দেখতে পান। পরে বিষয়টি স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন। করোনার কারণে আর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়নি। বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী থাকার পরও কিভাবে খোঁয়া যাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ তো কাউকে দেখিয়ে নেয় না-সুযোগ বুঝেই নেয়।
ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ মিয়া বিভিন্ন সামগ্রী চুরি হয়ে যাবার কথা স্বীকার করে বলেন, ভবনটি যথা সময়ে নিলামে বিক্রি করে দিলে সরকার লাভবান হতো।
সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল মালেক জানান, ভবনটি ইজারার মাধ্যমে বিক্রির জন্য বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি রেজুলেশন করেছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার নান্দাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক বলেন, সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘটনাটি দেখে আসার জন্য বিদ্যালয়ে পাঠানোর পাশাপাশি থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।