জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় এক বছর আগে বন্যার পানির তোড়ে শুয়াকৈর সেতু ভেঙে পড়ে। সেখানে নতুন কোনো সেতু নির্মাণ না করায় ১৯ গ্রামের লাখখানেক মানুষ ঝিনাই নদ পারাপারে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর গ্রামের পাশে ঝিনাই নদের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়। ২০০৬ সালে এর কাজ শেষ হয় ।
স্থানীয় লোকজন বলেন, সেতুর দুই পাশ থেকে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি উত্তোলন করা হতো। এ অবস্থায় ২০২০ সালের জুলাই মাসের বন্যার পানির তোড়ে সেতুর মাঝখানের তিনটি স্প্যান ভেঙে পড়ে। এতে উপজেলার সদরের সঙ্গে কামরাবাদ, সাতপোয়া ও পাশের মাদারগঞ্জ উপজেলার সিধুলী ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের লাখখানেক মানুষ এক বছর ধরে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
চুনিয়াপটল গ্রামের গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ব্রিজের নিচ থাইকে মেশিন দিয়ে মাটি তুলছে। তাই ব্রিজ বানে ভাঙে গেছে। এহন আমগো পারাপারে কষ্ট করন লাগে।’
শুয়াকৈর গ্রামের বাসিন্দা মো. রিফাত মিয়া বলেন, সেতু ভেঙে যাওয়ায় নৌকা দিয়ে নদ পারাপার হতে হয়। ঘাটে অনেক সময় নৌকা থাকে না। অপেক্ষা করতে হয়। রাত-বিরাতে প্রয়োজন হলে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
স্থানীয় লোকজন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করার জন্য সেতুটি ছিল তাঁদের একমাত্র পথ। এখান থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে শিশুয়া এলাকায় আরেকটি সেতু আছে। সেখান পর্যন্ত যেতে টাকা আর সময় দুই–ই বেশি ব্যয় হয়। তাই সবাই নৌকায় করে পারাপার হন। অন্যদিকে শিশুয়া এলাকার সেতুর সংযোগ সড়কও ভাঙা। ফলে ওই সেতু দিয়েও ভারী যান চলাচল করে না।
কামরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনসুর আলী খান বলেন, তাঁদের দাবি, ভাঙা সেতুর জায়গায় আরেকটি নতুন সেতু যেন করে দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী রাকিব হাসান বলেন, সেতুর দুই পাশ থেকে বালু উত্তোলন করায় পিলারের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। ফলে সেতুটি ভেঙে যায়। নতুন সেতুর প্রাক্কলন তৈরি করে জেলা এলজিইডি কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।