সন্তান জন্মের ২২ দিন পার হলেও বুকে দুধ আসছিল না বলে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সাবিকুন্নাহার। এ অবসাদ থেকেই শিশুটিকে পানিতে ফেলে মেরে ফেলেন তিনি। এরপর ‘সাদা কাপড় পরে দুই নারী এসে ছেলেকে নিয়ে গেছে’ বলে নাটক সাজান তিনি।
ময়মনসিংহের তারাকান্দার বাসিন্দা সাবিকুন্নাহার রোববার (৮ আগস্ট) জেলা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক দেওয়ান মনিরুজ্জামানের কাছে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে শিশুপুত্র সাঈমকে পানিতে ফেলে হত্যার কথা এভাবে স্বীকার করেন তিনি। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ময়মনসিংহ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর প্রসূন কান্তি দাস এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সাবিকুন্নাহার গত ৬ আগস্ট গভীর রাতে দাবি করেন, রাত ৩টার দিকে সাদা কাপড় পরে দুই নারী ঘরের দরজা ধাক্কাধাক্কি করে খুলতে বলেন। তখন তিনি ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন। দরজা খোলার পর ওই দুই নারী সাঈমকে পানি খাওয়ানোর কথা বলে তাদের কোলে নেন। এরপর তিনি ওই দুই নারীর হাতে শিশুকে তুলে দেন এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফেরার পর বাচ্চা খুঁজে না পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন। পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে সাঈমকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তখন তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন ৭ আগস্ট বিকেলে বাড়ির পাশের পুকুরে সাঈমের মরদেহ ভেসে ওঠে।
অবশ্য সেদিনই কথাবার্তায় অসংলগ্নতার কারণে পুলিশ সাবিকুন্নাহারকে আটক করে নিয়ে যায়।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, সাবিকুন্নাহার রাত ৩টার দিকে নিজের শিশুসন্তানকে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যা করেন। হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে সাদা কাপড় পরা দুই নারী পানি খাওয়ানোর কথা বলে তার সন্তানকে নিয়ে গেছেন বলে দাবি করেন। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হয়। এক পর্যায়ে স্বীকার করেন, জন্মের ২২ দিন পরও বুকে দুধ না আসায় অবসাদে ভুগে তিনি শিশুটিকে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় রোববার (৮ আগস্ট) দুপুরে সাঈমের বাবা হুমায়ুন কবির তারাকান্দা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। পরে ওই মামলায় সাবিকুন্নাহারকে গ্রেফতার দেখানো হয়।