নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন। এই সংকটকালে উপজেলা চেয়ারম্যানকে পাশে পেয়ে মনে সাহস পাচ্ছেন করোনা আক্রান্ত রোগীরা।
তিনি সম্প্রতি উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে ফলমূল, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছেন। চিকিৎসকও নিয়ে গেছেন কোনো কোনো রোগীর বাড়িতে। চিকিৎসকের মাধ্যমে পরামর্শ প্রদান ও পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করছেন আক্রান্ত সন্দেহদের নমুনা।
করোনা আক্রান্তদের কাছে যেতে যখন নিজের স্বজনরা যেতে ভয় পান, তখন উপজেলা চেয়ারম্যানের এমন তৎপরতাকে মানবিক হিসেবেই দেখছেন সচেতন নাগরিকরা।
উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির স্বজনরা যখন দাফনে ভয় পান তখন তিনি ওই ব্যক্তি দাফন কাজে অংশ নিয়েছেন। কারও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পেলে তিনি তার বাড়িতে উপস্থিত হন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার খোঁজ-খবর নেন। প্রয়োজন হলে আর্থিক সহযোগিতাও করেন।
তিনি আরও জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৫০ হাজার বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে বিতরণ করেছেন। ১০ হাজার মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস দিয়েছেন। পিপিই দিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত সাংবাদকর্মীদের। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে মাইকিং করে জনসচেতনতা তৈরিতে ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ নেন। মসজিদে মসজিদে উপস্থিত হয়ে মুসুল্লিদের মধ্যে সরকারি নির্দেশনা প্রচার করেন।
তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার কর্মহীন, দু:স্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছেন। সহায়তা চেয়ে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল আসলেই তিনি সহায়তা নিয়ে ছুটে গেছেন সাহায্যপ্রার্থীর বাড়িতে। লকডাউন কার্যকর ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে তিনি মাঠ পর্যায়েও তৎপরতা চালাচ্ছেন। স্বেচ্ছাশ্রমের কৃষকের পাকা ধান কেটে দিয়েছেন।
করোনা আক্রান্ত কয়েকজন রোগী জানান, করোনা শনাক্তের পর তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। এ অবস্থায় উপজেলা চেয়ারম্যানকে পাশে পেয়ে মানসিক শক্তি পাচ্ছেন।
জাহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, সামাজিক দায়বোধ থেকেই একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। তার এমন মানবিক কার্যক্রম অব্যহত থাকবে।
এ বিষয়ে পূর্বধলা সরকারি কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক এমদাদুল হক বাবুল বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানকে পাশে পেয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর মনোবল বেড়ে যায়। তিনি মনে করেন, এটি দাওয়াই হিসেবেও কাজ করে। তার এমন মানবিক কর্মকাণ্ড খুব প্রসংশনীয়।