বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার খাদ্যগুদাম। আরো ভারি বৃষ্টি হলে গুদামে পানি ঢুকে ছয়টি গুদামে থাকা খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
গুদাম কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পানি জমে থাকে সরিষাবাড়ীর খাদ্যগুদামের চারপাশে। বৃষ্টির পানি বের হওয়ার পথ না থাকায় পুরো বর্ষা মৌসুমজুড়ে এই জলাবদ্ধতা থাকে। গত এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
জানা যায়, ১৯৬২ সালে ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার খাদ্যগুদাম নির্মাণ করা হয়। পরে ১৯৮০/৮২ দিকে আরো ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ছয়টি গুদাম নির্মিত হয়। শুরু থেকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। শুধু বৃষ্টিতে নয়, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বন্যায়ও পুরো খাদ্যগুদামের চারপাশে পানি থাকে। পানি বেশি হলে মজুত করা খাদ্যশস্য অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়। তবে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন খাদ্য গুদামে নিয়োজিত শ্রমিকরা। তাঁরা জলাবদ্ধতার মধ্যেই খাদ্যশস্য গাড়িতে তুলতে বা নামাতে হয়। এসময় প্রায়ই খাদ্যশস্য পানিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। পানিবাহিত রোগে পড়তে হয় শ্রমিকদেরও। জলাবদ্ধতার কারণে গুদামে খাদ্যশস্য নিয়ে আসা গাড়িচালকদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে।
খাদ্যগুদামে নিয়োজিত শ্রমিক সরদার সিপাহী লাল চৌধুরী বলেন, ‘অল্প বৃষ্টির পানিতেই গুদামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতার মধ্যে মালামাল বহন করতে খুব কষ্ট হয়। বর্ষাকালে পানির মধ্যে কাজ করে আমাদের পায়ে ঘা হয়ে যায়।’
ট্রাকচালক আইনালসহ অনেকেই বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে খাদ্যগুদামে মাল নিয়ে আসতে মন চায় না। উপজেলার অতি প্রয়োজনীয় এত বড় একটি খাদ্যগুদাম। এখানে নেই কোনো পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। পানি জমে থাকার কারণে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এখানে গাড়িতে খাদ্যশস্য নিয়ে আসলে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়তে হয়।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাবুল মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় গুদামে। পানি যাতে না ঢোকে তার জন্য প্রতিটি গুদাম গেইট ইট দিয়ে উঁচু করা হয়েছে। এখন পানি ঢুকে খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা আগে করা হয়নি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’