সারা দেশের মতো ময়মনসিংহের নান্দাইলেও করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং মারাও যাচ্ছে। লোকজন মানছেন না কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ। এই অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রশীদ ঝুঁকি নিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিচ্ছেন নিজ হাতে। পাশপাশি অনেক লোকজনের মোবাইল নাম্বার যোগাড় করে নিজের মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে খোঁজ খবর নেওয়া ছাড়াও ঘরে থেকে ফোন করতে বলছেন। তাহলেই পৌঁছে যাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নান্দাইল উপজেলায় গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত করোনা পজেটিভ হয়েছেন ৪২১ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনজন। চিকিৎসকদের ভাষ্য মতে, একটি উপজেলার জন্য করোনার এই চিত্র কম ভয়াবহ নয়। তারপরও মানুষ করোনার টিকা নিতে তেমন একটা উৎসাহ দেখাচ্ছেন না।
যে ভবনে টিকা দেওয়া হচ্ছে সেখানে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে দেখা যায়, দুটি বুথের সামনে টিকা গ্রহীতাদের তেমন কোনো ভিড় নেই। নিবন্ধনের কাগজ খাতায় নথিভুক্ত করে করে গ্রহীতা নির্দিষ্ট বুথে চলে যাচ্ছেন। টিকা গ্রহণের পর ভবনটির বারান্দায় রাখা চেয়ারে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে লোকজন চলে যাচ্ছেন। নারী বুথেও একই চিত্র দেখা গেছে।
আগত কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, নিবন্ধন করা একটা ঝামেলার বিষয়। যদি জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে হাসপাতালে এসেই টিকা গ্রহণ করা যেতো তাহলে ভালো হতো।
আজহারুল ইসলাম নামে অবসপ্রাপ্ত এক শিক্ষক জানান, আজ (সোমবার) তাঁকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফোন দিয়ে টিকা নেওয়া ছাড়াও চিকিৎসার যেকোনো সেবা নিতে তাঁর নাম্বারে ফোন করতে বলেছেন। এতে তিনি খুবই উৎসাহিত হয়েছেন। এটা নজীরবিহীন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএনফপিও) ডা. মাহমুদর রশীদ বলেন, ‘করোনা মহামারির সময়ের টিকা নিতে মানুষের তেমন উৎসাহ না দেখানো বড় চিন্তার বিষয়। আমি নিজে গ্রামে গ্রামে ঘুরে মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে মানুষকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তারপরও বুথের সংখ্যা বাড়ানোর মতো টিকা গ্রহিতা পাচ্ছি না। নান্দাইলে গত ১৪ জুলাই থেকে সিনোফার্মের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। গত ছয়দিনে (শুক্রবার ও সরকারি ছুটি বাদে) মাত্র এক হাজার ২৯৬ জন টিকা নিয়েছেন। এই হিসাবে দুটি বুথে মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২১৬ জন টিকা নিয়েছেন। টিকা প্রদানের জন্য আমাদের সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করতে পারছি না।’
তিনি আরো বলেন, জনপ্রতিনিধি, সমাজের শীর্ষ লোক বা যাদের কথায় কিছু লোক কথা শুনে তাঁদের ফোন নাম্বার যোগাড় করে ফোন দিচ্ছি। খোঁজ খবর নেওয়ার পাশপাশি আক্রান্ত রোগীদের ঘরে থাকতে বলছি। সেই সাথে আমার নাম্বারে ফোন করলেই পৌঁছে যাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা। আর যাঁরা হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে চান তাঁদের জন্য রয়েছে আলাদা জায়গা। যেখানে সকল সুবিধাসহ ৩০টি বিছানা রয়েছে।’