1. najmush71@gmail.com : admin : Najmush Shakeer
  2. munir2002lubnan@gmail.com : Munirul Huq Khan : Munirul Huq Khan
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন

ময়মনসিংহে চামড়ার ক্রেতা না পেয়ে লোকসানের মুখে ফড়িয়ারা

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০২১

কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধ্বস নেমেছে ময়মনসিংহে। এ বছর ক্রেতা কম থাকায় অবহেলায় মাটিতে গড়াচ্ছে চামড়া। এতে লোকসানের মুখে ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা। বিক্রি করতে না পেরে অনেক চামড়া মাটিতে পুঁতে ও নদীতে ফেলে দেয়ার খবরও পাওয়া গেছে।

ফরিয়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ট্যানারি মালিক ও প্রতিনিধিরা সিন্ডিকেট করে একজন-দুজন ব্যাপারী বাজারে চামড়া কিনতে আসেন। যে কারণে বাধ্য হয়েই কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়। এছাড়া সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনছেন না তারা।

তবে ট্যানারি মালিক বা প্রতিনিধিরা ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চামড়া সরকার নির্ধারিত মূল্যেই কেনা হচ্ছে। তবে তারা একেক দিন একেক বাজারে চামড়া কিনতে যান। কেউ কেউ আবার দেরি করেও চামড়া কেনেন।

শনিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী চামড়া বাজার শম্ভুগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, পশুর চামড়া বাজারে থাকলেও ক্রেতা কম। জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চামড়া বিক্রি করতে আসা ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ডেকে নিয়ে এক টাকা থেকে দেড় টাকায় খাসির চামড়া বিক্রি করছেন। গরুর চামড়া নিয়ে অনেকেই দাঁড়িয়ে আছেন। দাম বলছে না কেউ। প্রতি বছর বাজারে ১০ থেকে ১২ টি ট্যানারি মালিক বা প্রতিনিধি বাজারে আসলেও এ বছর এক থেকে দুজন ট্যানারি মালিক বা প্রতিনিধি বাজারে এসেছেন।

এ বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় ব্যবসায়ী সাগর মিয়া সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি সকাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় হাজারখানেক ছাগলের চামড়া এক টাকা থেকে দেড় টাকা মূল্যে কিনেছি। আবার যে ছাগলের চামড়াগুলো বড়, সেগুলো ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা দামেও কিনেছি। তবে, আমাকে অন্য ব্যবসায়ীরা ডেকে নিয়ে এক টাকা থেকে দেড় টাকায় ছাগলের চামড়া দিয়ে দিচ্ছেন।

জেলার তারাকান্দা থেকে ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে আসা বিরন্দ মনিঋষি বলেন, ‘প্রায় লাখ টাকার চামড়া কিনেছি। আজ ২৪ টা ছাগলের চামড়া নিয়ে বাজারে এসেছিলাম। এর মাঝে ৬টি চামড়া ৬০ টাকায় বিক্রি করেছি। বাকি ১৮টি চামড়া স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কাছে এক টাকা পিস বিক্রি করেছি। কারণ, চামড়া নিয়ে যতক্ষণ বাজারে থাকব, খরচ তত বাড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি গড়ে ১৫ টাকার চাইতে বেশি দামে প্রতি পিস চামড়া কিনেছি। প্রতি পিস চামড়ায় এক কেজি লবণ ও লেবার খরচসহ দাম পড়েছে ২৫ টাকার বেশি। বাজারে ক্রেতা নেই, তাই বাধ্য হয়ে কম দামে চামড়া বিক্রি করে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি।’

শেরপুরের নকলা গরুর চামড়া বিক্রি করতে আসা ফড়িয়া ব্যবসায়ী মতি রবিদাস বলেন, ‘২ লাখ ৫০ হাজার টাকার গরুর চামড়া বিক্রি করতে বাজারে এসেছি। তবে, এখনো কেউ দাম বলেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘২ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ১ লাখ টাকা দৈনিক ২০০ টাকা করে সুদের উপরে নিয়েছি। গতবারের মতো এবারও যদি লোকসান হয়, তাহলে বউ বাচ্চা নিয়ে পালাতে হবে।’

হালুয়াঘাটের ফড়িয়া ব্যবসায়ী কৃঞ্চ ঋষি বলেন, ‘এ বছর ৭ লাখ টাকার চামড়া কিনেছি। বাজারে ৩০০ চামড়া নিয়ে এসেছি। যে দাম বলে তাতে বিক্রি করা সম্ভব না। কারণ, বাজারে মাত্র দুজন ট্যানারি মালিকের প্রতিনিধি চামড়া কিনতে এসেছে। যারা আসছে তারাও সরকারি নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনছে না।‘

শম্ভুগঞ্জ চামড়া বাজারের ইজারাদার তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘১৯৮৭ সাল থেকে এই বাজার ইজারা নেই। এবারের মতো দরপতন আগে কখনো দেখিনি। চামড়া ও গরুর বাজারসহ ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছি এবারও লোকসানের আশঙ্কা করছি।’

এ বিষয়ে রিলায়েন্স ট্যানারির প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বলেন, ‘গুণগত মান দেখে চামড়া ক্রয় করছি।’

সিন্ডিকেট করে চামড়া কেনার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা চামড়া ক্রয় করতে এসেছি। অন্য ট্যানারির মালিকরা হয়তো পরে চামড়া কিনতে আসবে। তবে সরকার নির্ধারিত মূল্যেই চামড়া ক্রয় করছি।’

 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩ আঙ্গর টিভি