ময়মনসিংহের ভালুকায় কারখানামালিকের দুই পা কর্তনের মামলার প্রধান আসামিসহ মোট সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে র্যাব-১৪ ময়মনসিংহে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া প্রধান আসামির নাম জসিম উদ্দিন পাঠান (৫৫)। জসিমসহ দুজনকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পারুলদিয়া গ্রামের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। অপরজনের নাম মাসুম মোল্লা (৫০)। এর আগে বুধবার ও বৃহস্পতিবার র্যাব ও পুলিশের হাতে আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার হন। ওই পাঁচজন হলেন রুহুল আমিন পাঠান (৪০), ইকবাল পাঠান (৩৮), শিরীন আক্তার (৪০), রাফিকুল ইসলাম মুন্সী (৫৫) ও মোমিনুল ইসলাম (৩৫)।
ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এই সাতজনই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। মামলার এজাহারে আসামি হিসেবে আরও তিনজনের নাম রয়েছে। তাঁরা হলেন ভালুকা উপজেলার নাজিম উদ্দিন পাঠান (৫০) ও মিজানুর রহমান পাঠান (৪৫) এবং নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার রণজিৎ শীল (৩৫)। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৮-১০ জনকে।
পুলিশ ও র্যাব সূত্রে জানা গেছে, ভালুকা উপজেলার ধামশুর মৌজার ধোবাজানের খাল ভরাট ও জমি নিয়ে জসিম উদ্দিন পাঠানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে স্থানীয় আর্টি কম্পোজিট নামের ডায়িং কারখানার মালিক আবদুর রাজ্জাকের। ওই বিরোধের জেরে গত বুধবার সকালে আবদুর রাজ্জাকের ওপর হামলা হয়। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর ডান পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও বাঁ পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে ঝুলে পড়ে। পরে হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাঁ পা কেটে ফেলা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় গতকাল দুপুরে কারখানামালিকের ছেলে তৌফিকুর রাজ্জাক আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ভালুকা মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার আগেই ঘটনার দিন বুধবার রফিকুল ইসলাম মুন্সী, মমিনুল ইসলাম ও শিরিন আক্তারকে আটক করেছিল পুলিশ। তারা বুধবার রাতে আসামি রুহুল আমীন পাঠান ও ইকবাল পাঠানকে আটক করে। আর গতকাল রাতে প্রধান আসামি জসিম উদ্দিন পাঠান ও মাসুম মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব-১৪ মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নানুল ইসলাম বলেন, প্রধান আসামি জসিম উদ্দিন পাঠান ভালুকা উপজেলার পারুলদিয়া গ্রামের তাঁর এক আত্মীয়র বাসায় লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে জসিম ও অপর আসামি মাসুম মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে জসিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে একটি দা উদ্ধার করা হয়েছে। এই দা দিয়েই কারখানা মালিক আবদুর রাজ্জাককে কোপানো হয়েছিল। র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।