মো. কামাল। ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) একজন অফিস সহায়ক (পিয়ন)। কর্মকর্তার অনুপস্থিতে তিনিই কর্মকর্তার চেয়ারে বসেই অফিসের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার অফিস চলাকালীন এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চলতি আমন মৌসুমে বিএডিসির বীজ ধান কিনে প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেক কৃষক। তারা বীজ ধানের অঙ্কুরোদগম না হওয়ায় হতাশ হয়ে অফিসে এসে কর্মকর্তা খোঁজ করছিলেন। এ সময় কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কর্মকর্তা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে থাকা অফিস সহায়কের দ্বারস্থ হয়েও কোনো ধরনের সদুত্তর না পেয়ে হই-হুলোড় শুরু করেন।
খবর পেয়ে উপজেলার চন্ডীপাশা এলাকায় অবস্থিত বিএডিসি অফিসের সামনে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন কৃষক ধান ফেরত নিয়ে এসেছেন। জানতে চাইলে তারা জানান, গত এক সপ্তাহ আগে তারা এ অফিস থেকে ব্রি-৪৯ জাতের ১০ কেজি ধানের বীজ ক্রয় করেছেন ৩৭০ টাকায়। বাড়িতে নিয়ে নিয়মানুযায়ী পানিতে ভিজিয়ে রেখে নির্দিষ্ট সময়ের পর চাপা দিলেও ধানে অঙ্কুরোদগম হয়নি। বরং ধানে গন্ধ বের হয়েছে আর কালো হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বীজতলা তৈরি করেও বীজ বপণ না করতে পেরে হাতাশায় পড়েছেন। ঘটনাটি জানাতেই বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা অফিসে এসেও কোনো কর্মকর্তাকে পাননি।
এদিকে, কর্মকর্তা না থাকলেও তার চেয়ারে বসে খোশ মেজাজেই ছিলেন অন্য একজন। জানতে চাইলে তিনি চেয়ারে বসে থেকেই জানান দেন, তিনি এই অফিসের অফিস সহায়ক বা পিয়ন। বসের চেয়ারে বসলেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্যার নাই তো, তাই।’ কৃষকরা কেন অফিসের সামনে বিক্ষোভ করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা বেশ কয়েকদিন ধরেই আসছেন নিম্মমানের বীজের অভিযোগ নিয়ে। কিন্তু স্যারেরা তাদের কোনো ফয়সালা দিতে পারেননি। আজও কেউ আসেননি। এখানে কর্মকর্তা কে জানতে চাইলে পিয়ন কামাল ময়মনসিংহ জেলা অফিসের জাহাঙ্গীর আলম নামে এক উপসহকারী পরিচালকের কথা জানান। তার মোবাইল নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ওইখানে একজন নারী কর্মকর্তা আছেন। মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকায় তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের কারনে তিনি আসতে পারেননি।
কৃষকদের অভিযোগের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগের সত্যতা আছে। তবে ওপর মহল কিছু না করলে তার কিছু করণীয় নাই।