মধ্যবয়সী তিন ব্যক্তি কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের বাজার এলাকায় আয়েশি মেজাজে হেঁটে যাচ্ছিলেন। ওই সময় তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধার মুখে পড়েন।
কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও তাঁদের ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ জানতে চান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিমাদ্রী খীসা। প্রশ্নে তাঁদের একজনের জবাব ছিল, ঘরে ভালো লাগছিল না। তাই বাইরে বের হন। শেষে নদীর পাড় থেকে হাওয়া খেয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।
তিনজনের কাছ থেকে ‘হাওয়া খাওয়া’ ছাড়া বাইরে বের হওয়ার বিশেষ কারণ না পাওয়ায় শেষে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০০ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লকডাউনের প্রথম দিনে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে বাইরে বের হওয়ায় ভৈরবের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩০ জনকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এর মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানার নেতৃত্বে বের হওয়া টিম ৯ জনকে অর্থদণ্ড দেন। তাঁদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ১ হাজার ২০০ টাকা। হিমাদ্রী খীসা অর্থদণ্ড দেন ২১ জনকে। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া যায় ১২ হাজার টাকা।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডিত ৩০ জনের মধ্যে শরীরে ‘হাওয়া লাগাতে’ ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ ছিল একাংশের। দণ্ডিত ব্যক্তিদের অপর একটি অংশ ছিল মোটরসাইকেল আরোহী। তাঁদের অনেকে ফাঁকা সড়ক পেয়ে বাইক চালানোর ‘ইচ্ছার’ কথা জানান। আবার কয়েকজন জানান, লকডাউনের প্রথম দিনের চিত্রটি কেমন তা দেখতে বের হয়েছেন। আবার কারও কারও জবাব ছিল ঔদ্ধত্যপূর্ণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভৈরবে প্রথম দিনের লকডাউন বেশ কার্যকর ছিল। বিশেষ করে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় লোকজন এমনিতেই অনেকটা ঘরমুখো হয়ে পড়েন। সকাল থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সেনা টহল লক্ষ করা যায়। তবে মহাসড়ক দিয়ে কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে দেখা গেছে। গাড়ির বেশির ভাগ যাত্রী ছিলেন বিদেশফেরত।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিমাদ্রী খীসা বলেন, জীবন বাঁচাতে সরকার যেখানে এত কিছু করছে, সেখানে মানুষের হাওয়া খেতে মন চাওয়া সত্যিই হতাশার। লকডাউন শতভাগ কার্যকর করতে হলে সর্বস্তরের মানুষের সচেতনার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য তাঁর।