অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরি, মোহনগঞ্জ, মদনের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় রাস্তাঘাট তলিয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দী হয়ে যাচ্ছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, পানি এভাবে বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
আজ বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৌকত বলেন, জেলার সব কটি প্রধান নদ-নদীর পানিই বাড়ছে। এর মধ্যে সোমেশ্বরী নদীর দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৫৫ মিটার। প্রবাহিত হচ্ছে ১২ দশমিক ৭৫ মিটার। আর অন্য সবগুলো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
মোহনলাল সৌকত জানান, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর বিজয়পুর পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৮৯ মিটার। সেখানে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১৪ দশমিক ৫২ মিটার দিয়ে। কংস নদের জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৫৫ মিটার, সেখানে প্রবাহিত হচ্ছে ১০ দশমিক ১৫ মিটার দিয়ে। কলমাকান্দা উব্দাখালী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমা ৬ দশমিক ৫৫ মিটার, সেখানে প্রবাহিত হচ্ছে ৬ দশমিক ৫ মিটার দিয়ে। আর খালিয়াজুরির ধনু নদের খালিয়াজুরি বাজার পয়েন্টে বিপৎসীমা ৫ দশমিক ৬১ মিটার, সেখানে প্রবাহিত হচ্ছে ৫ দশমিক ৫ মিটার দিয়ে। আজ নেত্রকোনা সদরে বৃষ্টিপাত হয় ২০৫ মিলিমিটার, দুর্গাপুরে ১৬৮ মিলিমিটার, জারিয়ায় ১১০ মিলিমিটার ও মোহনগঞ্জে ৪৬ দশমিক ৮ মিলিমিটার।
অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কলমাকান্দা সদর, বড়খাপন, কৈলাটি, পোগলা ইউনিয়ন, দুর্গাপুরের কুল্লাগড়া, গাওকান্দিয়া ইউনিয়ন, মোহনগঞ্জ, মদন ও খালিয়াজুরি উপজেলার বেশ কয়েকটি নিচু এলাকায় রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। পানিবন্দী হয়ে পড়ে ১০ হাজারের মতো মানুষ। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, পানি বাড়তে থাকলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টিতে জেলায় বিভিন্ন রাস্তাঘাট, সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের চত্বরে পানি জমে থাকে। পানিতে শতাধিক পুকুর তলিয়ে গেছে। এতে করে এসব পুকুরের মাছ ভেসে যায়।
জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান জানান, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্ন নদ-নদী ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে বৃষ্টি না হলে হয়তো এসব পানি কমে যেতে পারে। জেলা প্রশাসনের পর্যাপ্ত খাবার, আশ্রয়সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। স্থানীয় ইউএনওদের সঙ্গে কথা বলে যদি কোনো কিছু প্রয়োজন পড়ে, তবে তা সরবরাহ করা হবে।