নতুন ফল ও ফসল ঘরে উঠবে। তার আগে কৃতজ্ঞতা জানাতেই হবে শস্যদেবতার প্রতি। কৃতজ্ঞতা জানানোর মাধ্যম ওয়ানগালা উৎসব। গারো সম্প্রদায়ের এটাই চল। এবার করোনা সবকিছু থমকে দিলেও ধর্মীয় আচার, রীতিনীতি স্বল্প পরিসরে হলেও যথাসম্ভব করতে হবে। তাই কিছুটা দেরিতে হলেও নেত্রকোনার দুর্গাপুরে প্রতিবছরের মতো গারোরা ওয়ানগালা উৎসব করছে।
বিরিশিরি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি আজ বুধবার দুই দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করেছে। বেলা ১১টার দিকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের সাংসদ মানু মজুমদার। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যোগ দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিরিশিরি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির সভাপতি (পদাধিকারবলে) জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন একাডেমির পরিচালক সুজন হাজং।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছাড়াও বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনের সাংসদ জুয়েল আরেং, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন, নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী, দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট আদিবাসী গবেষক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ। এতে প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি মিঠুন রাকসাম।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘ওয়ানগালা গারো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব হলেও এটি এখন আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই উৎসব বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে মেলবন্ধন সৃষ্টি করছে। এই উৎসবের আনন্দ এখন সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সর্বজনীন রূপ ধারণ করেছে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধারণ, লালন ও চর্চার মাধ্যমেই বহমান থাকে। এ বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখেই বর্তমান সরকার জাতীয় সংস্কৃতির পাশাপাশি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ, পরিচর্যা, বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বর্তমানে সাতটি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, নওগাঁ ও দিনাজপুরে আরও তিনটি নতুন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন জনমুখী কর্মসূচি গ্রহণের ফলে গারোসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ জীবনমানের অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।