অত্যাধিক করোনা আক্রান্ত কয়েকটি জেলায় লকডাউনের কারণে ওইসব জেলার সাথে শেরপুরে চলাচলকারী বাস এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২১ জুন সোমবার মধ্যরাতে শহরে এ সংক্রান্ত মাইকিং করা হয়েছে। এদিকে, লকডাউনের কারণে হঠাৎ করে শেরপুর থেকে সোমবার রাতের নাইট কোচ বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
সোমবার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জরুরি ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ২২ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জে লকডাউন (বিধিনিষেধ) আরোপ করা হয়েছে। এই সাত জেলায় সব বন্ধ থাকবে। মানুষও যাতায়াত করতে পারবে না। শুধু মালবাহী ট্রাক এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কিছু চলবে না। জেলাগুলো ব্লক রেইড থাকবে, কেউ ঢুকতে পারবে না। সেই জেলাগুলো ছাড়াও খুলনা, যশোর, চাপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা জেলাসহ সীমান্তবর্তী আরও কয়েকটি জেলার সাথে শেরপুরের বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তোফায়েল আহমেদ জানান, অত্যাধিক কভিড আক্রান্ত কয়েকটি জেলা হতে শেরপুরে চলাচলকারী বাস এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে। রাতেই শহরে মাইকিং করা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরো কিছু নির্দেশনাসহ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
শেরপুর কালেক্টরেটের স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক এটিএম জিয়াউল ইসলাম ‘প্রেস শেরপুর’ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে জানান, জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্র স্বার্থত্যাগ/ত্যাগ স্বীকার একান্তভাবে কাম্য। আমাদের সামনে রাস্তা দুটো- হয় হার্ড ইমিউনিটি অথবা ম্যাসিভ ভ্যাক্সিনেশন। চায়না সম্প্রতি ১০০ কোটি মানুষকে ভ্যাক্সিন দেয়া শেষ করেছে। হার্ড ইমিউনিটির মূল্য অনেক প্রাণের বিনিময়ে দেয়া লাগতে পারে। কাজেই রিজওনাল লকডাউন, মাস্ক ব্যবহার, জনসমাগম এড়ানো, ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলো থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা, এটাই এই মুহূর্তে বেস্ট সলুউশন।
উল্লেখ্য, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে গত ১১ জুন থেকে শেরপুর পৌর এলাকায় দুই সপ্তাহের বিশেষ বিধিনিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন। এই অবস্থায়ও সাধারণ মানুষের অসচেতনতার কারণে জেলায় করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। গত মে মাসে জেলায় করোনার আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিল ৬৮ জন। অথচ জুন মাসের শুরু থেকে ২১ জুন পর্যন্ত তিন সপ্তাহেই জেলায় ৩৭৩ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তন্মধ্যে মারা গেছেন ৩ জন।
সিভিল সার্জন ডা. এ.কে.এম. আনওয়ারুর রউফ জানিয়েছেন, শেরপুর এখন ইয়োলো জোন থেকে করোনা সংক্রমণের অরেঞ্জ জোনে রয়েছে। যেকোনো মুহুর্তে এটা ‘রেড জোনে’ পরিণত হতে পারে। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে, মাস্ক পড়তে হবে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।