ময়মনসিংহের নান্দাইলের একটি গ্রামে তসবি পাঠের জন্য ১২৪ জন নারীকে প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক দিয়ে যাচ্ছিলেন ঢাকার এক নারী। প্রায় এক বছর ধরে এভাবেই চলছিল। ৮ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে টাকা আসা। এতে ১২৪ জন নারীর পাওনার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৩ লাখ টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাঁশহাটি গ্রামের হাবিবুল্লাহর স্ত্রী নাসরিনের সঙ্গে দুই বছর আগে রাজধানীর লালমাটিয়ার বাসিন্দা মোছা. নাসরিন নামের এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয়।
এরই সূত্র ধরে স্থানীয় নারীদের ধর্মীয় পথে আনার জন্য ১২৪ জন নারীকে একত্রিত করেন। নারীদের ধর্মীয় পথে আনার জন্য যা করার দরকার তাই করবেন বলে অঙ্গীকার করেন নাসরিন।
সে অনুযায়ী তিনি ১২৪ জন নারীকে বাছাই করে প্রত্যেককে এক হাজার দানার একটি তসবির ছড়া তুলে দেন। তসবির ছড়া এক হাজারবার পড়লে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা করে প্রত্যেককে দেয়া হবে এবং মাস শেষে তা পরিশোধ করা হবে।
এতে প্রত্যেক নারীর মাসে পারিশ্রমিক হয় ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা। বেশ কয়েক মাস টাকা পরিশোধ করলেও আট মাস ধরে ঢাকার ওই নারী আর টাকা পাঠাচ্ছেন না। ফলে গ্রামের নাসরিন ওই ১২৪ জনকে টাকা দিতে পারছেন না।
টাকা দিতে না পারায় নারীদের তসবি পাঠ বন্ধ রাখতে বলেন। কিন্তু গ্রামের নারীরা তার বাড়িতে গিয়ে তাগাদা দেন টাকা পরিশোধের জন্য। এক মাস ধরে তাকে হুমকি-ধমকিও দেয়া হচ্ছে।
এরই জেরে মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকেলে উপজেলার বাঁশহাটি গ্রামের নাসরিন বেগমের বাড়িতে ১২৪ জন নারী টাকার জন্য যান। টাকা না দিতে পারায় ওই নারীকে পার্শ্ববর্তী একটি দোকানে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কেউ কোনো অভিযোগ না করায় কাউকে আটক করা হয়নি।’