নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী দুটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষদের ঘরে ঘরে জ্বর ও সর্দি-কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। রোগীরা দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভিড় করছেন। সচেতনতা না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অসুস্থ অবস্থায়ও হাটবাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেউ কেউ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে কুল্লাগড়া ও দুর্গাপুর ইউনিয়ন সীমান্তবর্তী। ওই এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন পাহাড়ে নানা ধরনের কাজ করতে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
দেশের বর্তমান করোনা প্রেক্ষাপট এবং সীমান্তের ওপারে ভারতে মেঘালয় রাজ্যে ব্যাপক করোনা রোগী থাকায় আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই গোপালপুর, ভবানীপুর, দাহাপাড়া, তিনআলী, লক্ষ্মীপুর, ভরতপুর, বারমারি গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা বিভিন্ন কাজের জন্য বের হচ্ছেন।
দুর্গাপুর প্রেস ক্লাব মোড়ের পন্ডিত ফার্মেসির মালিক বিপ্লব পন্ডিত বলেন, অন্যান্য রোগীর চেয়ে বর্তমানে বেশিরভাগ রোগীই আসছেন সর্দি, কাশি ও জ্বরের ওষুধ নিতে। এ নিয়ে আমরাও আতঙ্কে রয়েছি। প্রতিদিন শত শত রোগী আসছেন এসব রোগের ওষুধ নিতে।
দুর্গাপুর সীমান্তের বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জ হুমাউন কবীর বলেন, ‘সীমান্তে অবৈধ চলাচলের বিষয়ে আমরা শুরু থেকেই কঠোর অবস্থানে রয়েছি। বর্তমান করোনা প্রেক্ষাপটে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সীমান্ত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সাধারণ লোকজন, পর্যটক বা কোনো প্রকার চোরাকারবারি আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আসা-যাওয়ার সুযোগ নেই।’
দুর্গাপুর উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তানজিরুল ইসলাম বলেন, দৈনিক শতাধিক মানুষ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসছেন জ্বর, সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথা নিয়ে। এদের মধ্যে অধিকাংশই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর। আমাদের মেডিকেল অফিসাররা ২৪ ঘণ্টা জরুরিসেবা চালু রেখেছেন। আগতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপত্র দিয়ে নিজ নিজ বাড়িতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ এখনো সচেতন নয়। আমাদের এলাকায় ব্যাপকভাবে করোনা পজিটিভ দেখা না দিলেও ভারতের সীমান্তবর্তী উপজেলা হিসেবে আতঙ্কে রয়েছি।’
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজীব উল আহসান বলেন, ‘সর্দি, কাশি ও জ্বরের রোগী বেড়েছে এমন খবরে আমরা সীমান্ত নজরদারি বাড়িয়েছি।’
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘সীমান্তে সর্দি-জ্বরের রোগী বাড়ছে বলে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে জরুরি মিটিং করব। প্রয়োজন হলে ওই দুই ইউনিয়নে লকডাউনের চিন্তা করব।’